গোলমালের আশঙ্কা এড়াতে এবার সাধারণ নির্বাচনের আদলে কোচবিহারের কলেজগুলিতে আঁটোসাটো নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করানোর সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে শুক্রবার জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, পুলিশ সুপার ও সমস্ত মহকুমাশাসকদের নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে জেলাশাসক মোহন গাঁধী ওই সিদ্ধান্তের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। প্রশাসন সুত্রেই জানা গিয়েছে, জেলার কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই ছাত্র রাজনীতির বাতাবরণ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে মাথাভাঙা কলেজে টিএমসিপি ও ডিএসও-র সংঘর্ষে ৭ জন জখম হন। কোচবিহার কলেজ, তুফানগঞ্জ কলেজেও যুযুধান বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া রায়গঞ্জ-সহ বিভিন্ন কলেজের পরিস্থিতিও প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। |
জেলাশাসক বলেন, “ছাত্র সংসদের নির্বাচন ঘিরে জেলায় যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে বিশদে আলোচনা হয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য জেলায় একই দিনে নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করার ব্যাপারে আমরা জোর দিচ্ছি। এখনও যেসব কলেজ নির্বাচনের দিন চূড়ান্ত করা হয়নি তাদের বুধবারের মধ্যে পচ্ছন্দের তারিখ জানাতে বলা হয়েছে। এসব ছাড়াও সাধারণ নির্বাচনের মতো ভোটের দিন কলেজ চত্বরে মোবাইল নিষিদ্ধ করা, ১৪৪ ধারা জারির বিষয়গুলিও বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, তুফানগঞ্জ কলেজে ২৭ জানুয়ারি, কোচবিহার ও মাথাভাঙা কলেজে ৩১ জানুয়ারি, শীতলখুছি ও হলদিবাড়ি কলেজে ৪ ফ্রেব্রুয়ারি ছাত্র সংসদের নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। কোচবিহারের এবিএন শীল, মেখলিগঞ্জ, বক্সিরহাট, দিনহাটা-সহ আরও সাতটি কলেজে নির্বাচনের তোড়জোর শুরু হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “৩১ জানুয়ারি দুটি কলেজের নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। হলদিবাড়ি ও শীতলখুচি একই মহকুমা পুলিস আধিকারিকের আওতাধীন। সেই কারণে শীতলখুচি কলেজ কর্তৃপক্ষকে ভোটের দিন বদল করতে বলা হয়েছে। জেলার বাকি যে সব কলেজে নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত হয়নি সেখানে এক দিনে একটি কলেজে ভোট করানোর ব্যাপারে পরিকল্পনা হয়েছে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “জেলার কলেজগুলির ভোটে যাতে শান্তিতে হয় সেই জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা হচ্ছে।” প্রশাসনের ওই উদ্যোগে আশ্বস্ত বিভিন্ন কলেজ। শীতলখুচি কলেজ অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন বলেন, “প্রশাসনের ভূমিকা প্রশংসনীয়। ভোটের দিন পিছিয়ে দেওয়ার আলোচনা শুরু হয়েছে।” দিনহাটা কলেজের অধ্যক্ষ আশিস সরকার জানান, ছাত্রদের সঙ্গে বসে আলোচনার পরে মার্চে সম্ভাব্য দু’টি তারিখ ডিএমকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
|