|
|
|
|
|
পিঠে খেলে পেটে সয়!
পৌষ এলে বাঙালি বাড়ির গন্ধই বদলে যেত। মা-মাসির দল
তুলোর আদরে গড়েপিটে তুলতেন নানা রকমের পিঠে। সেই
সব আদরের দিনগুলো। আহা! অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় |
|
|
উত্তুরে হাওয়া বইলেই বাঙালির জীবনে দক্ষিণ হস্তের কাজকর্ম একটু বেড়ে যায়। জয়নগরের মোয়া থেকে প্লাম কেক বাঙালির শীতভোজনের ফিরিস্তি ফুরোনোর নয়। তবে ক্লাসিকাল বাঙালির লিস্টে সবার আগে রয়েছে পৌষের পিঠে, যা না খেলে সত্যিই পেটে সয় না তাঁর!
ডাল পিঠে, গোকুল পিঠে, রসপুলি, চন্দ্রপুলি, বেণী পিঠে, তেলের পিঠে, চুটকি পিঠে, ভাপা পিঠে পিঠে অনেক। পিঠে প্রণালীও অনেক রকম। ছোটবেলায় মাকে দেখতাম |
|
অলংকরণ: দেবাশীষ দেব |
মকরসংক্রান্তিতে পিঠে ব্যাপারটা ছিল রীতিমত রিচুয়ালের মতো। কেক ছাড়া যেমন ক্রিসমাস হয় না, পিঠে ছাড়া পৌষ ছিল তেমনই অসম্ভব। আজকাল অবশ্য মায়ের হাতের পিঠে ব্যাপারটা মিষ্টির দোকানের প্রপার্টি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে পিঠে তৈরির চল কসমো-কলকাতায় প্রায় উঠতে বসেছে। জেলা কিংবা শহরতলির ছবিটা যদিও তেমন পালটায়নি আজও।
|
|
আসলে আজ বাঙালির ব্যাপারটা হল, যত ক্ষণ না এই ভিনটেজ খাদ্যবস্তুটি মডার্ন প্যাকেজিংয়ে আসছে, মল-ফেরত বাঙালি তাকে আমলই দেবে না। উদারীকরণ হয়ে আমাদের ক্ষুদ্রচিন্তার সুযোগটা ক্রমশ বাড়ছে। ভয় হয়, কোনও দিন না শুক্তো, কী পোস্তর বড়া খেতে আমাদের বিদেশ যেতে হয়!
হতাশা থাক বাতাসা হাতে, চলুন আমরা বইমেলা, ট্রেড ফেয়ার, গঙ্গাসাগর, ফ্লাওয়ার শো, ইডেন গার্ডেনস, পার্ক স্ট্রিট ঘুরে ফিরে যাই অন্তঃপুরে, যেখানে পুলি-পিঠে-পাটিসাপটার পুর হিসেবে ঠাসা আছে আদি ও অকৃত্রিম বাঙালিয়ানা। হলই বা মেড ইন মিষ্টির দোকান, হাত পাল্টালে কতটাই বা তার জাত পাল্টায়, শুধু সব মায়ের আশীর্বাদ থাক মাথার ওপরে, আর মনে থাক তাঁদের স্নেহমাখানো সেই সব অসামান্য পিঠে-স্মৃতি! |
|
|
|
|
|