|
মুছে যাবে দাগ
যাঁদের শ্বেতি রয়েছে, তাঁদের কেমন যেন
আলাদা চোখে দেখা হয়।
কিন্তু ঠিক সময়ে
চিকিৎসায়
শ্বেতি সেরে যায়। ডা. সুব্রত মালাকার |
|
|
শ্বেতি সম্বন্ধে আমাদের সমাজে বহু দিন যাবৎ অনেক ভয়, সংকোচ, লজ্জা ইত্যাদি গেঁথে আছে। ঠিক সময়ে ঠিক চিকিৎসা হলে শ্বেতি সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে যায়। এক থেকে দুই শতাংশ লোকের শ্বেতি দেখা যায় এবং এর প্রায় অর্ধেক লোকের শ্বেতি দেখা যায় কুড়ি বছর বয়স হওয়ার আগে। শ্বেতি হওয়ার অনেক কারণ। তার মধ্যে প্রধান হল অটোইমিউনিটি। এ ক্ষেত্রে মেলানোসাইট কোষগুলি, যা মেলানিন তৈরি করে, সেই কোষের বিপরীত একটি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তারা মেলানোসাইটকে বাঁচতে দেয় না। এর ফলে শ্বেতি হয়। শ্বেতি নির্ধারণের জন্য কোনও পরীক্ষানিরীক্ষার দরকার হয় না। খালি চোখেই ধরা পড়ে। এই রোগের সঙ্গে খাবারের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু, কিছু প্রসাধন ব্যবহারের ফলে যে অ্যালার্জি বের হয়, তার থেকে শ্বেতি হতে পারে।
|
শ্বেতির চিকিৎসা |
শ্বেতির নতুন চিকিৎসা |
• খাওয়ার ও লাগানোর ওষুধ আছে। লাগানোর ওষুধে
দুই
ঘণ্টা পরে সাদা অংশে রোদ লাগাতে হয়।
• ফোটোথেরাপি পদ্ধতিতে ‘আলট্রাভায়োলেট এ’
এবং ‘আলট্রাভায়োলেট বি’ প্রয়োগ করা হয়। |
• এক্সজাইমার ৩০৮,
• এপিডারমাল সেল
সাসপেনশন,
• স্টেম সেল থেরাপি,
• এক্সজাইমার ৩০৮ |
শল্য চিকিৎসা |
• বিভিন্ন গ্রাফটিং পদ্ধতির সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়। |
|
|
এক্সজাইমার ৩০৮ |
এটি একটি যন্ত্র বিশেষ। এর মধ্যে জেনন ক্লোরাইড গ্যাস পোরা থাকে। এখান থেকে এক ধরনের রশ্মি বের হয়, সেটা দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এটি ফোটোথেরাপির সর্বাপেক্ষা আধুনিক প্রয়োগ। চলতি ফোটোথেরাপির সঙ্গে এর বিরাট পাথর্ক্য আছে। চলতি ফোটোথেরাপিতে সমস্ত অংশে রশ্মিটির ছোঁয়া লাগে।
|
কোন কোন রোগীর ওপর এটি প্রয়োগ করা যাবে না |
• যাঁদের ত্বকে ক্যানসার আছে • যাঁদের আলট্রা ভায়োলেট অ্যালার্জি আছে • যাঁরা রেডিয়োথেরাপি নিচ্ছেন • যাঁরা এমন কিছু ওষুধ খাচ্ছেন, যাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। |
কী ভাবে রশ্মিটির প্রয়োগ হয় |
অল্প থেকে বেশি পরিমাণে, এই ভাবে, বাড়িয়ে কমিয়ে ঠিক পরিমাণটি নির্ধারণ করা হয়। যে পরিমাণ ত্বকের রং, লাল বা গোলাপি, সেখান থেকে শুরু করা হয়। এটি নেওয়ার পর ত্বকটি লাল হতে পারে বা চুলকাতে পারে বা ফোস্কা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (তবে খুবই কম)। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। |
|
কত দিন পর নেবেন |
সপ্তাহে এক, দুই বা তিন বার পর্যন্ত নেওয়া যায়। তবে, সপ্তাহে দুই বার নিলেই যথেষ্ট।
এই চিকিৎসার সফলতা নির্ভর করবে কত বার নেওয়া হল, তার ওপর। |
এটি কেমন ভাবে কাজ করে |
• মেলানোসাইট কোষকে যে ধ্বংস করছে, তাকে এক্সজাইমার ৩০৮ নির্মূল করে দেয়। |
এপিডারমাল সেল সাসপেনশন |
যাঁদের শ্বেতি গত ছ’মাস থেকে এক বছরের মধ্যে নতুন করে বৃদ্ধি পায়নি, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। এ ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, এই রোগীদের দেহের কোথাও কেটে গেলে জায়গাটি যেন সাদা না হয়ে যায়। |
কী ভাবে পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা হয় |
• উরুর ওপর দিকের অংশ থেকে অল্প কিছুটা ত্বক পাতলা করে কেটে নিতে হয়। এখানে খুবই দক্ষতার প্রয়োজন।
• এর পরের ধাপে ল্যাবরেটরির সাহায্য প্রয়োজন। ত্বকের অংশটিকে এনজাইমের মধ্যে একটি তাপমাত্রায় পঁয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশ মিনিট রাখা হয়।
• এর পর এপিডারমিসের কোষগুলিকে সূক্ষ্ম ভাবে ছাড়াতে হয়।
• কোষগুলিকে একটি টেস্ট টিউবের মধ্যে নেওয়া হয় এবং একটি যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুত ঘোরাতে হয়। তখন দেখা যায়, সব কোষগুলি কালো হয়ে টেস্ট টিউবের নীচে এসে জমা হয়েছে। এর পর শ্বেতির উপরিভাগের ত্বক কিছুটা উঠিয়ে তার ওপরে কোষের মিশ্রণটি লাগিয়ে দেওয়া হয়।
|
অন্যান্য গ্রাফটিংয়ের থেকে এটির পার্থক্য |
অল্প কিছু ত্বক নিয়ে শরীরের অনেক অংশে করা হয়। এই পদ্ধতিটির মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে রং আসতে শুরু করে। |
স্টেম সেল |
• স্টেম সেলই মানবদেহের প্রধান কোষ (মাস্টার সেল)। এই কোষগুলি নিজেরা বিভক্ত হয়ে নিজেদের কপি তৈরি করতে পারে। আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে স্টেম সেল পাওয়া যায়।
• স্টেম সেলগুলি যেহেতু বহুমুখী, সেই কারণে শ্বেতি ঠিক করার কাজে লাগতে পারে।
• এটি পরীক্ষার স্তরেই আছে। কোন কোন রোগীর ওপর এটি প্রয়োগ করা যাবে, সেই নির্বাচনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর সাধারণ ত্বকে প্রথমে একটি বায়প্সি করাতে হবে। সেটির এনজাইমেটিক চিকিৎসা করতে হবে। ওখানে কোষ তৈরি করে সেটির সাহায্যে চিকিৎসা করতে হবে। |
যোগাযোগ: ২৩৫৮ ৮০১০, ৯৪৩৩০২৩৮৭৯
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|