থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। পাঠানো হয়েছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। কিন্তু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী পদে নিয়োগ না-হওয়ায় এখনও চালু হয়নি ওয়ার্ডটি। ফলে থ্যালাসেমিয়া রোগীরা এই ওয়ার্ডে ভর্তিই হতে পারছেন না।
বছরখানেক আগে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া ওয়ার্ড তৈরির প্রস্তাবটি আসে মেডিক্যাল কলেজের হেমাটলজি বিভাগ থেকে। ‘জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন’ (এনএইচআরএম) প্রকল্পে ওয়ার্ডটি করা হয়েছে। মহকুমা হাসপাতালের দ্বিতলেই দু’ কামরার ওয়ার্ডটিতে রাখা হয়েছে সাতটি শয্যা।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রায় প্রতি দিনই দু’এক জন থ্যালাসেমিয়া রোগী এখানে আসেন। শুধু উলুবেড়িয়া মহকুমার ৯টি ব্লক নয়, কোলাঘাট, পাঁচলা, সাঁকরাইল, জগৎবল্লভপুর, ডোমজুড় প্রভৃতি এলাকা থেকেও রোগী আসেন। তাঁদের কাউন্সেলিং থেকে শুরু করে রক্ত দেওয়ার কাজ সবই করতে হয়। কিন্তু এই সব রোগীর জন্য পৃথক কোনও ব্যবস্থা নেই। সাধারণ রোগীদের সঙ্গে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসা হয়। সাধারণ রোগীদের ওয়ার্ডেই তাঁদের রেখে রক্ত দেওয়া হয়।
পৃথক ওয়ার্ড চালু হলে এই সমস্যা অনেকটাই মিটবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হলে থ্যালাসেমিয়া রোগীরা তাঁদের নিজস্ব ওয়ার্ডেই ভর্তি হতে পারবেন। এখানেই তাঁদের কাউন্সেলিং, রক্ত পরীক্ষা এবং রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়াও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের অন্য কোনও অসুখ হলে যেখানে বর্তমানে সাধারণ ওয়ার্ডেই ভর্তি করানো হয়, পৃথক ওয়ার্ডটি চালু হলে সেখানে ভর্তির ব্যবস্থা থাকবে।
মাস চারেক আগেই ওয়ার্ডটি তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। শয্যা পাতা হয়েছে। তৈরি হয়েছে রক্ত পরীক্ষার ল্যাবরেটরি। এসে গিয়েছে চিকিৎসার উপযোগী বেশ কিছু দামী যন্ত্রপাতি। সেগুলি গুদামে রেখে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক, কাউন্সিলর, নার্স, ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রভৃতি পদে নিয়োগ না হওয়ায় ওয়ার্ডটি এখনও চালুই করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সদ্য বদলি হওয়া হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার গৌরাঙ্গসুন্দর জানা।
মূলত তিনি থাকাকালীনই ওয়ার্ডটি তৈরির কাজ শুরু এবং শেষ হয়। গৌরাঙ্গবাবু বলেন, “চিকিৎসক-সহ অন্যান্য পদে নিয়োগের দায়িত্ব জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। আমি বহু বার এইসব পদে নিয়োগের জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছিলাম। জানি না বিষয়টি কোন অবস্থায় রয়েছে।”
চিকিৎসক, কাউন্সিলর, নার্স, ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে খুব শীঘ্রই নিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) স্বাতী দত্ত। তিনি বলেন, “ওই সব পদে নিয়োগের জন্য আইনানুগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব নিয়োগ শেষ করে থ্যালাসেমিয়া ওয়ার্ডটি চালু করে দেওয়া হবে।” |