নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
নতুন ভবন তৈরি হতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের (সিএমওএইচ) দফতরের। দীর্ঘ দিন ধরে ভাড়া বাড়িতেই গুরুত্বপূর্ণ এই অফিসটি চলছিল। এ বার নিজস্ব স্থায়ী ঠিকানা পেতে চলেছে। শীঘ্রই অফিস তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। রাজ্য পূর্ত দফতরের কনস্ট্রাকশন বোর্ড পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পূর্ত দফতরের বিদ্যাসাগর ডিভিসনের মাধ্যমে এই কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে। বিদ্যাসাগর ডিভিসনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তরুণ চক্রবর্তীর বক্তব্য, “নতুন ভবন তৈরির জন্য টাকা মঞ্জুর হয়েছে। কিছু টাকা এসেও গিয়েছে। শীঘ্র কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নিজস্ব কোনও অফিস নেই। শহরের বিভিন্ন এলাকার ভাড়া বাড়িতে এই অফিস চলছিল। কোনও অফিসে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা বসতেন তো কোনও অফিসে ডেপুটি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা বসতেন। ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষেও ওই অফিসে যাওয়া সমস্যার ছিল। তা ছাড়াও ভাড়া বাড়িতে অফিস করার জন্য ভাড়াও দিতে হত। পরবর্তীকালে অবশ্য জেলা পরিষদের তিনতলায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিস স্থানান্তরিত হয়। সেখানেও অবশ্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। বারান্দায় একের পর আলমারি। তার মধ্যেই কর্মী ও অফিসারদের যাতায়াত। কেউ আলমারি খুললেই যাতায়াত আটকে যায়। ছোট ঘরে একাধিক কর্মীর বসার জায়গা। সেই সঙ্গেই রয়েছে আলমারি, ফাইল। সাক্ষাৎপ্রার্থীরাও সেখানেই ভিড় করেন। এক কথায়, ঘুপচি ঘরেই চলছে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অফিস। যে ঘরে কাঠের পার্টিশন দিয়েই একাধিক কর্মী ও আধিকারিকের বসার ব্যবস্থা। চূড়ান্ত অব্যবস্থা। |
এত দিনে সিএমওএইচ অফিসের নিজস্ব ভবন তৈরির জন্য ১ কোটি ৮২ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা মঞ্জুর করেছে সরকার। তার মধ্যে ৭৫ লক্ষ টাকা পূর্ত দফতরকে দিয়েও দিয়েছে সরকার। যাতে ২০১১-১২ আর্থিক বছরেই কাজ শুরু করে দেওয়া যায়। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে তিনতলা বাড়ি তৈরি করা হবে। যার ভিত হবে ৫ তলা ভবনের উপযোগী। যাতে ভবিষ্যতে অফিসের পরিসর বাড়লে সম্প্রসারণ সম্ভব হয়। নতুন ভবনটি তৈরি করা হবে জজকোর্টের কাছে। সেখানে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি গুদাম রয়েছে। যেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র মজুত রাখা হয়। সেখান থেকেই জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ পাঠানো হয়। গুদামের পাশেই কিছুটা জমিও রয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। ওই জমির উপরেই নতুন ভবন তৈরি করা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। নতুন ভবন হলে ওখানে জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক, ডেপুটি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে শুরু করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তারা বসবেন। ওখানেই থাকবে গুদামও। ফলে, স্বাস্থ্য দফতরে কাজ নিয়ে এসে যেমন একাধিক জায়গায় মানুষকে ঘুরে বেড়াতে হবে না, তেমনই বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তাদেরও একাধিক জায়গায় যেতে হবে না।
এত দিন কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওষুধ প্রয়োজন হলে, কী কী ওষুধ কত পরিমাণ প্রয়োজন তার তালিকা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে অনুমোদন করাতে হত। জেলা পরিষদে থাকা ওই অফিসে অনুমোদনের পর যেতে হত গুদামে। এ বার একই জায়গায় দু’টি অফিস থাকায় সুবিধা হবে। ফলে কম সময়েই সব কাজ করা সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মী, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরের কর্মীরা---সবাই উপকৃত হবেন। |