নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আমরি কাণ্ডে ধৃত সেখানকার অন্যতম ডিরেক্টর রাধেশ্যাম অগ্রবালের জামিনের আবেদন আগেই একাধিক বার খারিজ করে দিয়েছিল আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। শুক্রবার আলিপুরের জেলা ও দায়রা জজের আদালতেও তাঁর জামিনের আর্জি নাকচ হয়ে গিয়েছে। ওই অভিযুক্ত ডিরেক্টর যে হাসপাতালের দৈনন্দিন কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সরকারি কাগজপত্রে তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে জামিন দেয়নি আদালত।
ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে সেখানকার অন্য ছয় ডিরেক্টরের সঙ্গে রাধেশ্যামকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার সময় থেকেই তিনি আছেন হাসপাতালে। তিনি অসুস্থ এবং ওই হাসপাতালের রোজকার কাজকর্মের সঙ্গে তাঁর যোগ ছিল না বলে জানিয়েই বারবার জামিনের আবেদন করা হচ্ছিল। মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একাধিক বার জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার পরে মঙ্গলবার তাঁর পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়েছিল জেলা ও দায়রা জজের আদালতে। মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের নির্দেশে রাধেশ্যাম এখন এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ১৬ জানুয়ারি মূল মামলার শুনানি হবে তাঁর আদালতেই। ওই দিন রাধেশ্যামকে এসএসকেএম থেকে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করানো হবে।
রাধেশ্যাম অগ্রবাল |
এ দিন আলিপুরের দায়রা আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুদেব মিত্রের এজলাসে রাধেশ্যামের জামিনের আবেদন নিয়ে দীর্ঘ শুনানি হয়। অভিযুক্তের আইনজীবীরা বলেন, রাধেশ্যাম ১৯৮৬ সাল থেকেই অসুস্থ। ’৯৫ সালে তাঁর বাইপাস অস্ত্রোপচার হয়। তার পরেও তিনি সুস্থ হননি। ২০১১ সালের মে মাসে তিনি দু’বার পড়ে যান। তাঁর হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে তাঁর স্ট্রোকও হয়। বাইরের সব রকম কাজকর্ম থেকে তিনি বিরত থাকেন। তিনি
ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালের কোনও কাজকর্মের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন না। চিকিৎসকের উপস্থিতিতে পুলিশ তাঁকে বহু বার জেরা করেছে। তিনি তাতে সহযোগিতাও করেছেন। তাঁকে বাড়িতে রেখে ভাল ভাবে চিকিৎসা করানো দরকার। সেই জন্য তাঁর জামিনের আর্জি মঞ্জুর করা হোক।
জামিন আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করে সরকার পক্ষ বলে, তদন্তের কাজ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ৮ ডিসেম্বর রাতের অগ্নিকাণ্ডে আমরি হাসপাতালের ৯৩ জন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। সেই হিসেবে সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই মামলার গুরুত্ব অনেক। ওই হাসপাতালের
প্রাত্যহিক কাজের সঙ্গে রাধেশ্যামের যোগাযোগের তথ্যপ্রমাণও আদালতে পেশ করে সরকার পক্ষ। সরকারি আইনজীবীরা বলেন, ওই অভিযুক্ত ডিরেক্টর প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি জামিনে ছাড়া পেলে সাক্ষ্যপ্রমাণে কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক সুদেব মিত্র জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, সরকার পক্ষের পেশ করা নথিপত্রে এটা পরিষ্কার যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি হাসপাতালের দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু অভিযুক্তের তরফে আইনজীবীরা তা অস্বীকার করেছিলেন। আমরির ঘটনার গুরুত্ব বিচার করেই অভিযুক্তের জামিনের আর্জি খারিজ করা হল। |