নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ইঁদুর-বিড়ালের দৌরাত্ম্য আছে। পিঁপড়ে-ছারপোকার উপদ্রব আছে। এ বার চোর! সরকারি হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটল খাস কলকাতার বুকেই। শুক্রবার বিকেলে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই ঘটনা সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, কানিজ বেগম নামে এক মহিলা ১১ জানুয়ারি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। ১২ তারিখে তাঁকে এবং তাঁর শিশুকে সাধারণ শয্যায় স্থানান্তরিত করা হয়। কানিজ বেগম শুক্রবার বেলা সাড়ে ৪টে নাগাদ চিকিৎসক ও নার্সদের জানান, তাঁর ছেলেকে তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। হইচই পড়ে যায়। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত ওই নবজাতকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দায়িত্বে থাকা আয়াকে আটক করেছে। বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
কী ভাবে নিখোঁজ হল শিশু?
কানিজ বেগম বলেন, “ছেলে হওয়ার পর থেকেই এক মহিলা আমার সঙ্গে এসে গল্প করতেন। বলতেন, ওঁর আত্মীয়ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ছেলেকে কোলে নিয়ে ওয়ার্ডেই ঘোরাতেন, ঘুম পাড়াতেন, আদর করতেন। তিনিই এসেছিলেন। বিকেলের পর থেকে ওই মহিলাকে দেখছি না, ছেলেও নেই!”
হাসপাতালের ওয়ার্ডে বাইরের লোকের ভিড়ই যে এই ধরনের ঘটনার সুযোগ করে দেয়, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ন্যাশনাল-কর্তৃপক্ষ। সুপার পার্থ প্রধানের কথায়, “রোগীদের আত্মীয়স্বজন যে যখন পারছে প্রসূতি ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ছে। হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী কম। তাঁদের পক্ষে এত লোকের কার্ড যাচাই করা সম্ভব নয়।” তিনি জানান, হাসপাতালের রক্ষীদের সাহায্য করার জন্য পুলিশ-কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। তাঁরা প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত রক্ষী এখনও আসেনি।
এমনিতে হাসপাতালগুলিতে এক জন ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী মোতায়েন থাকে। হাসপাতাল-চত্বরে থাকে পুলিশ ফাঁড়িও। তা সত্ত্বেও শিশু চুরি যাচ্ছে কী ভাবে? কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বলেন, “সন্দেহ করা হচ্ছে, হাসপাতালের কার্ড হাতে নিয়ে ঢুকেই কেউ বাচ্চা চুরি করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |