‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে হতাশ প্রদেশ কং নেতৃত্ব
হাইকম্যান্ডের ‘ধীরে চলো’ নীতিতে হতাশ রাজ্য কংগ্রেসের নেতৃত্বের একাংশ।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় সংগঠনকে ‘চাঙ্গা’ করতে ধানের সহায়ক মূল্যের দাবি সামনে রেখে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলায় জেলায় কবে কোথায় সেই আন্দোলন হবে, তার কর্মসূচি শুক্রবারই ঘোষণা করার কথা ছিল দলীয় নেতৃত্বের। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ও অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত শাকিল আহমেদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পরে সেই ঘোষণা এ দিন করা হয়নি। হাইকম্যান্ডের ‘নির্দেশ’ দলের নেতা ও কর্মীদের ‘উৎসাহে জল ঢেলে দিয়েছে’ বলে এ দিন বিধান ভবনে উপস্থিত নেতাদের অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য অবশ্য এ দিন প্রকাশ্যে বলেছেন, “শাকিল বা প্রণবদা কেউ আমাদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলেননি। আর আমরাও কোথাও বলিনি, শুক্রবারই আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব।” তা হলে আন্দোলন কবে হবে? প্রদীপবাবুর জবাব, “আন্দোলন নিয়ে আমরা জেলা নেতাদের সঙ্গে আরও পর্যালোচনা করে নিতে চাই। এক এক জেলা কী ভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি করেছে তা আমাদের জেনে নেওয়া দরকার। তারপরেই ধান-পাটের সহায়ক মূল্য যাতে চাষি পায় সেই দাবিতে জেলা স্তর আন্দোলন হবে।” আন্দোলনের ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে এ দিন শাকিল বলেন, “এটা রাজ্য কংগ্রেসের ব্যাপার।” তবে রাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূলের কাজিয়া যে আলোচনা করে দ্রুত মিটিয়ে ফেলা উচিত এ দিন তা আবার জানিয়েছেন শাকিল। তিনি বলেন, “আমরা চাই জোট শরিক তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্ব আলোচনা বিতর্ক মিটিয়ে ফেলুন। কারণ, কেন্দ্রে ইউপিএতে তৃণমূল দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোটে আমরা আছি। ফলে দুই শরিকের মধ্যে বিরোধ থাকা উচিত নয়।’’ উল্লেখ্য, আগামী শুক্রবার দিল্লিতে রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের জরুরি বৈঠকে ডেকেছেন হাইকম্যান্ড।
‘চাষিদের বঞ্চনা’র প্রতিবাদে ধর্মতলার সমাবেশ মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা নিয়ে এখন কংগ্রেসের অভ্যন্তরে একটা ‘বিতর্ক’ও হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, অধীর চৌধুরীর মতো নেতারা ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছেন, ওই সমাবেশে মূল সমস্যা নিয়ে আলোচনার চেয়ে ‘ব্যক্তি সমালোচনা’ই প্রাধান্য পেয়েছে। মূল সমস্যা থেকে সরে গিয়ে তা জোট কাজিয়ায় পরিণত হয়েছে। ওই নেতাদের মতে, এর ফলে মূল সমস্যাই চাপা পড়ে গিয়েছে। মাঝখান থেকে যে বিষয় ধরে কংগ্রেস আন্দোলন করে রাজ্য রাজনীতিতে দলকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তোলা যেতে পারত তা হল না।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রণববাবুর সঙ্গে প্রদীপবাবুর আলোচনা হয়। কংগ্রেসের হাইকম্যাণ্ডের নির্দেশের কথাই প্রদীপবাবুকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে কাজ করার ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন প্রণববাবু। এ দিন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও ঢাকুরিয়ায় প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করেন। প্রদীপবাবুকে যা বলেছিলেন প্রণববাবু, এ দিন মান্নানকেও তা-ই বলেছেন বলে কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “জোটের মধ্যে কাজিয়া অবিলন্বে বন্ধ করার দরকার কেন তা প্রণববাবু দলের যে সমস্ত নেতা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন তাদের বুঝিয়ে বলেছেন। সামনে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের ভোট কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। তারপরেই রয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেট। সব মিলিয়ে তাঁর রাজ্য রাজনীতি নিয়ে আর ব্যতিব্যস্ত হতে চান না।”
জোট কাজিয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রণববাবু বলেন, “জোটের ব্যাপারে আপনাদের সব তরজা, যাত্রা এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। যিনি পশ্চিমবঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্বে আছেন তিনি তাঁর বক্তব্য জানিয়েছেন। এই জোট রাজনৈতিক কারণে হয়েছিল। জোট আছে, থাকবে।” এ দিন কলকাতাতেও এই বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে প্রণববাবু বলেন, “যা বলার শাকিল কালকেই বলে দিয়েছেন। আমার কিছু বলার নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.