|
|
|
|
সংখ্যালঘু নেতাদের বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক, বললেন ফিরহাদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতি রাখছে না বলে সংখ্যালঘু নেতাদের অভিযোগের মোকাবিলায় নামলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। শুক্রবার তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট সরকারের রাজত্বে সংখ্যালঘু উন্নয়নে কোনও কাজই হয়নি। ৩৪ বছরের বঞ্চনার প্রতিকার তো সাত মাসে করে ফেলা যায় না! কিন্তু এই সময়ে কিছু হয়নি, তা বলা ঠিক নয়। এ ধরনের মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক!” পুরমন্ত্রীর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী এই সাত মাসেই সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে, বিশেষ করে তাঁদের শিক্ষার প্রসারে অনেক কাজই করেছেন।”
বৃহস্পতিবারেই তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে ‘সরব’ হয়েছিলেন সংখ্যালঘু নেতারা। ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু কাউন্সিলে’র এক সভায় ধর্মীয় নেতা ক্বারী ফজলুর রহমান অভিযোগ করেছিলেন, “বর্তমান সরকার মুসলিমদের জন্য এখনও কোনও কাজ করে উঠতে পারেনি।” সংখ্যালঘু নেতাদের ওই ‘ক্ষোভে’র প্রসঙ্গে এ দিন পুরমন্ত্রী পাল্টা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের ব্যাপারে যথেষ্ট আম্তরিক। তিনি তাঁর হৃদয় দিয়ে এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল মানসিকতা নিয়ে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের ব্যাপারে কাজ করছেন।” প্রসঙ্গত, এ দিন দিঘায় সমুদ্র উৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন ফিরহাদ। যিনি নিজে ঘটনাচক্রে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। তাঁর ‘প্রতিক্রিয়া’ যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই, তা স্পষ্ট। সরকারি সূত্রেও তার সমর্থন মিলেছে।
প্রতিশ্রুতি মতো আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১৬ লক্ষ ৭০ হাজার পড়ুয়াকে ঋণ ও বৃত্তি দেওয়ার কথা গত মঙ্গলবারই নেতাজি ইন্ডোরে এক সরকারি অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী তিন লক্ষাধিক পড়ুয়ার হাতে প্রায় ৬৪ কোটি টাকার চেকও তুলে দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন ফিরহাদ বলেন, “ওই অনুষ্ঠানে তো ক্বারী ফজলুর রহমান সাহেবও ছিলেন! তা হলে তার দু’দিন পরেই তিনি কী করে বললেন, সরকার কিছু করছে না! আমার তো সেটা দেখেই অবাক লাগছে!” উল্লেখ্য, ওই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী পূর্বতন বাম সরকারের সমালোচনা করে বলেছিলেন, “আমরা ১৬ লক্ষ পড়ুয়াকে সাহায্যের কথা বললেও আগের বাম সরকার দু’লক্ষকেও কিছু দিতে পারেনি। সব চেক বাউন্স করেছিল।”
মমতা-সরকারের সমালোচনা অবশ্য এর আগেও ক্বারী ফজলুর রহমান করেছেন। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার দু’মাসের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই ওই ধর্মীয় নেতা মন্তব্য করেছিলেন, সংখ্যালঘুদের জন্য কিছুই করা হচ্ছে না। এ দিন পুরমন্ত্রী দাবি করেন, প্রতিশ্রুতি মতো সরকারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী উর্দুকে দ্বিতীয় ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘আর্ন্তজাতিক মানে’র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। পুরমন্ত্রী বলেন, “রাজারহাটে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। পাশেই পাঁচ একর জমি দেওয়া হয়েছে ‘হজ হাউস’ তৈরির জন্য। ১০ হাজার মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, মুসলিম ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তারে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই মাদ্রাসা শিক্ষায় বিজ্ঞানকে অর্ন্তভূক্ত করার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার।’’ পুরমন্ত্রীর আরও দাবি, সংখ্যালঘু অধ্যূষিত এলাকায় আরও বেশি করে বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারেও সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। কাজের সুযোগ তৈরির জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করতে ‘আইটিআই’ স্থাপন করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে তাদের জীবনের মানোন্নয়নের বিষয়েও তাঁদের সরকার ‘অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছে’ বলে জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী। |
|
|
 |
|
|