অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরা নাস্তানাবুদ হয়েই চলেছেন। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে শীতের দাপুটে ব্যাটিং কিন্তু অব্যাহত! আজ, শনিবার দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্রই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও খানিকটা কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
বৃহস্পতিবার শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছিল নদিয়া, হাওড়া। শুক্রবার তার সঙ্গে যুক্ত হয় বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল এবং হুগলির গ্রামীণ এলাকা। বিশেষ করে উপকূলবর্তী এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যে-ভাবে কমছে, তাতে শীত নিয়ে রীতিমতো আশাবাদী আবহবিদেরা। উপগ্রহ-চিত্রে দক্ষিণবঙ্গের জন্য কোনও খারাপ সঙ্কেত এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং তাপমাত্রার কমার প্রবণতা আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলেই আবহবিদদের ধারণা।
দক্ষিণবঙ্গের মতো উত্তরবঙ্গেও জোর শীত পড়েছে। দার্জিলিঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শূন্যের তিন ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গিয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ে আরও তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। পাল্লা দিয়ে কমতে থাকবে সমতলের তাপমাত্রাও। |
শুক্রবার সাতসকালে বীরভূম, বাঁকুড়া-সহ দক্ষিণবঙ্গের কোথাও কোথাও হাল্কা কুয়াশা এসে রোদকে কিছুটা ঠেকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু উত্তুরে হাওয়াকে দাবিয়ে রাখার ক্ষমতা ছিল না সেই কুয়াশার। কলকাতায় দুপুরের পরে হঠাৎই ঢুকে পড়ে এক রাশ মেঘ। কিন্তু সন্ধ্যার মুখে উত্তুরে হাওয়ার ঝাপটায় সেই মেঘ উড়েও যায়। তাই শুক্রবারেও শৈত্যপ্রবাহ চলে দক্ষিণবঙ্গের চারটি জেলায়। কলকাতা ও দমদমে তাপমাত্রা আরও কমে যায়।
আজ, শনিবারেও গোটা দক্ষিণবঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে বলে জেলা প্রশাসনগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এবং এই সতর্কবার্তার আওতায় থাকছে খাস কলকাতাও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “দক্ষিণবঙ্গ এবং তার সংলগ্ন এলাকায় বায়ুপ্রবাহের যা অবস্থা, তাতে শনিবার সব ক’টি জেলায় তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাই আমরা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা বহাল রাখছি।”
রাজ্যের মানুষের কাছে এ মরসুমে এটাই শীতের দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংসে বড়দিনের আগে ঘটা করেই হাজিরা দিয়েছিল শীত। মহানগরী-সহ দক্ষিণবঙ্গে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল তার দাপট। লোকমুখে ফিরছিল কলকাতার সঙ্গে লন্ডনের তুলনা! কিন্তু সেই সুখ বেশিদিন টেকেনি। পরের পর উচ্চচাপ বলয়, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে শীত পাততাড়ি গুটিয়েই ফেলেছিল। মৌরসি পাট্টা গেড়ে বসেছিল অকালমেঘ।
রাজ্যবাসী ভাবতে শুরু করে দিয়েছিলেন, গরম জামাকাপড়, লেপ-কম্বলের প্রয়োজন হয়তো বা ফুরোল এ বছরের মতো! কিন্তু অবশেষে ভাগ্য ফিরল। মেঘ সরে যেতেই তীব্র উত্তুরে হাওয়া ঢুকে পড়ল বৃহস্পতিবার। ঝপ করে নেমে গেল তাপমাত্রা। এতটাই যে, তিন বছর পরে খাস কলকাতাতেও ফের শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা তৈরি হল। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করল আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
এই পর্যায়ে তবে কত দিন পাওয়া যাবে শীত? হাওয়া অফিস তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। তবে মকরসংক্রান্তি তো বটেই, আগামী কয়েকটা দিন যে রাজ্যের মানুষ জমিয়ে শীত উপভোগ করতে পারবেন, সেই আশা দিয়েছে তারা। |