কোথাও পাড় ভাঙা পুকুরের মধ্যে চলে গিয়েছে রাস্তার বড়ো অংশ, কোথাও বা উঁচু হয়ে রয়েছে বড় বড় ইঁট। বেহাল অবস্থা বাদুড়িয়ার বাগজোলা পঞ্চায়েত এলাকার এই রাস্তার। হাটবাজার, হাসপাতাল-সহ শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হন।
মহকুমা, প্রশাসন, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগজোলা বাজার থেকে বেরিয়ে মান্দ্রা, রাজাপুর, খাজরা, চাজরা মোড় হয়ে তেঁতুলিয়া রোডে মেশা প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তাটির দীর্ঘদিন ধরে মেরামতির অভাবে বেহাল অবস্থা। অথচ ওই রাস্তা দিয়েই প্রায় ১৫ টি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। ওই রাস্তার মধ্যেই পড়ে কয়েকটি মাদ্রাসা, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র। চাষিদের প্রতিদিন গ্রাম থেকে বাগজোলা, চাতরা বাজারে যেতে হয়। রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে প্রায়ই ফসল বাজারে নিয়ে যেতে দেরি হয়। ফলে উপযুক্ত দামও পান না তাঁরা। |
রাস্তার এই বেহাল দশা হওয়ার ফলে ভ্যানরিকশা ছাড়া আর কোনও যানবাহনও মেলে না। ইদানীং আবার রাস্তায় দুর্ঘটনা বা টায়ার ফেটে যাওয়ার ভয়ে ভ্যানরিকশাও মিলছে না বেশি। পাইলিংয়ের অভাবে রাস্তার বাঁকে থাকা পুকুরের পাড় ভেঙে রাস্তার বড় অংশ ধসে পড়েছে। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তার কারণে অনেকেরই মৃত্যু হচ্ছে। এমন কী রাস্তার কারণে বিয়ে আটকে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁদের।
রাস্তা মেরামতির জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানালেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই দেখে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। রাজাপুর গ্রামের অলিউর রহমান, রমিলা বিবি, রবিউল আলম, হামিদুর তরফদার বলেন, “রাস্তার কারণে ভ্যানরিকশা ছাড়া অন্য কোনও যান চলে না, তার উপর প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাতবিরেতে অসুস্থকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কষ্টের। প্রসূতিদের হাসপাতালে যাওয়ার সময়ে অনেক সময়েই পথে সন্তান জন্মানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ সব জেনেও রাস্তা ঠিক করার বিষয়ে টনক নড়ছে না প্রশাসনের। শীতের দিনে যদিও বা চলা ফেরা করা যায়, বর্ষায় স্কুল, মাদ্রাসায় যাওয়ার সময়ে ছাত্রছাত্রীরা রাস্তার গর্তে পড়ে কাদায় মাখামাখি হতে হয়।” বাগজোলা পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল রজ্জাক বলেন, “এতো বড় রাস্তা মেরামতির জন্য টাকা পঞ্চায়েতের হাতে টাকা নেই বলেই জেলা পরিষদকে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় রাস্তার জন্য সমীক্ষাও হয়েছে। কিন্তু তারপর আর কাজ কিছু এগোয়নি।” জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মধ্যক্ষা আনোয়ারা বিবি বলেন, “রাস্তাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য খুব জরুরি। তাই আরআইডিএস এবং পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পে বিষয়টি রাখা হয়েছে। আশা করা যায়, একটি প্রকল্পে কয়েক মাসের মধ্যেই ওই রাস্তার কাজ শুরু হবে।” |