ভর্তি নিয়ে সরকারি নির্দেশে যে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে, কৃষ্ণনগর এবং লাগোয়া এলাকার একাধিক স্কুল লটারি না করেই ছাত্র ভর্তি করে তা আরও এক বার স্পষ্ট করে দিল।
বেথুয়াডহরি জেসিএম হাইস্কুল কিংবা কোতোয়ালির দোগাছি হাইস্কুল সেই তালিকায় অন্যতম। দিন কয়েক আগে ৩২৩ জন আবেদনকারীর মধ্যে থেকে ১০০ জনকে সরাসরি বাছাই করেছিল জেসিএম হাইস্কুল। ওই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে আসন সংখ্যা ৩২০টি। পরিচালন সমিতি সিদ্ধান্ত নেয় লটারি করার পরে বাকি আসনে আশেপাশের পাঁচটি প্রাথমিক স্কুল ও দু’টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র থেকে সরাসরি ছাত্র ভর্তি নেওয়া হবে।
স্কুলের পরিচালন সমিতি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। পরিচালন কমিটি সরকারি নির্দেশিকা কী ভাবে অমান্য করল প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের কল্লোল খাঁ অবশ্য বলেন, ‘‘যেটা আইন সেটা মানতেই হবে।’’ শুক্রবার দোগাছি হাইস্কুলও একই পথে হাঁচল। তবে ওই স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, ভর্তির ব্যাপারে তারা কোনও সরকারি নির্দেশিকাই পায়নি। তাই গত তিন-চার দিন ধরেই লটারি না করেই সেখানে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। ৩ জানুয়ারি থেকে ভর্তি শুরুও হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ আসনে ভর্তিও হয়ে গিয়েছে। স্কুলের পরিচালন সমিতি সিপিএমের দখলে।
পরিচালন সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভর্তি নিয়ে আমাদের স্কুলে কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। যারাই আবেদন করেছে সকলকেই নেওয়া হয়েছে। এ বারেও তাই লটারির কথা ভাবিনি।’’ তবে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ওই স্কুলগুলির লটারি না করাকে ‘ঔদ্ধত্য’ বলেই মনে করছেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও স্কুল আইন অমান্য করে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মঙ্গলবার ১০০ টি আসনে লটারি করার বিষয়টি জানার পরেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? বিশ্বজিৎবাবুর সাফাই, ‘‘আমার কাছে তো কেউ অভিযোগ করে নি।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ এটা স্কুল পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত।’’ পরিচালন সমিতির সভাপতি অংশুমান দে বলেন, ‘‘গণ্ডগোল এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত।’’ তবে শুধু বেথুয়াডহরি জেসিএম হাইস্কুলই নয়, পঞ্চম শ্রেণির ভর্তিতে কোনও লটারিই হল না কোতয়ালির দোগাছি হাইস্কুলে। ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে আসন সংখ্যা ২৫০। লটারি না করে আশপাশের ন’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সরাসরি ছাত্র ভর্তি নিচ্ছে ওই স্কু্ল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহর বিশ্বাস বলেন, ‘‘এটা পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত। তাছাড়া আমরা লটারির বিষয়ে কোনও লিখিত নির্দেশিকাও পাইনি।’’ জেলার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেন ওই স্কুল নির্দেশিকা পেল না তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। |