দক্ষিণ কলকাতা
বেহাল পরিষেবা
হস্তান্তরের আগে
কোথাও জঞ্জালের স্তূপ, কোথাও বা নিকাশির জমে থাকা জল। কিছু জায়গায় ভাঙা রাস্তা। এ ছবি ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে রাজডাঙায় পুর্ব কলকাতা উপনগরীর।
কয়েক বছর আগেই কলকাতা পুরসভাকে এই উপনগরী হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। কিন্তু প্রশাসনিক জট থাকায় এই সমস্যার সমাধান হয়নি। পরে তা মিটলেও এই উপনগরী হস্তান্তরের সময় প্রস্তাবিত অর্থের পরিমাণ কী হবে তা নিয়ে দুই সংস্থার মধ্যে মতান্তর থাকায় বিষয়টি আটকে থাকে। তবে, সম্প্রতি মেয়রের উদ্যোগে এই সমস্যার সমাধান হয়েছে। আগামী, দু’-এক মাসের মধ্যেই এই উপনগরী পুরসভাকে হস্তান্তর করা হবে।
পুরসভার মেয়র তথা কেএমডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কেএমডিএ-র কাছ থেকে কলকাতা পুরসভা এই উপনগরী হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই উপনগরীর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেএমডিএ পুরসভাকে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করবে। বাকি অর্থ দেবে পুরসভা। হস্তান্তরের জন্য যে সমস্ত নিয়মকানুন দরকার তার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।” রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও বলেন, “পূর্ব কলকাতা উপনগরী কলকাতা পুরসভাকে হস্তান্তর করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ব্যাপারে মেয়রের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে। কেএমডিএ পুরসভাকে সমগ্র প্রকল্পের ৬০ শতাংশ দেবে। বাকি অর্থ পুরসভাকেই দিতে হবে।”
তবে এই উপনগরী পুরসভাকে হস্তান্তরের ব্যাপারে এখনও কী কী সমস্যা রয়েছে?
এই উপনগরীর রাস্তাঘাট, নিকাশি, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণ করার পরই কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে তা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি না করে এই এলাকা অধিগ্রহণ করলে পুর পরিষেবার ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে। সেই কারণেই গত পুরবোর্ডের আমলে পুর-কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প গ্রহণ করেননি। এই এলাকায় কোথায় নিকাশি নালা এবং রাস্তাঘাট কী অবস্থায় রয়েছে তা কেএমডিএ এবং পুরসভা যৌথ ভাবে পরিদর্শন করার পরেই এই এলাকা অধিগ্রহণ করা হবে বলে পুরকর্তৃপক্ষ কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে জানান।
পরিদর্শনের পর পুরসভা বর্তমান পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ এবং এলাকার নতুন রাস্তাঘাট ও নিকাশি নির্মাণের জন্য মোট ৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে। কিন্তু কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান, পুরসভাকে ২৫ কোটি টাকার বেশি দেওয়া সম্ভব নয়। এই নিয়েই সমস্যা দানা বাঁধে। শোভনবাবু বলেন, “আপাতত বর্তমান পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেএমডিএ পুরসভাকে ২৫ কোটি টাকা দেবে। এর পরেও পরিষেবা সংক্রান্ত এবং এলাকার সামগ্রিক উন্নতিকল্পে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা দেবে পুরসভা।”
পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২২০০ একর জায়গা জুড়ে এই এলাকা। স্থানীয় কাউন্সিলর সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, “এলাকায় পুর-পরিষেবার কাজ চলছে ঠিকই। তবে কিছু সমস্যাও রয়েছে। এই উপনগরী হস্তান্তর হলে সমস্যার সমাধান হবে। এলাকার প্রায় তিরিশ হাজার বাসিন্দাও উপকৃত হবেন।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার‌্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.