|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
হেমন্ত বসু মার্কেট |
অনিশ্চিত বিপণন |
দীক্ষা ভুঁইয়া |
নির্মাণ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই বাজারের উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে। অথচ, তার পরে বছর ঘুরে গেলেও সেই বাজারের নির্মাণ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই অবস্থা তারাতলা রোডের
উপর অবস্থিত জননায়ক হেমন্ত বসু মার্কেট বা জিঞ্জিরা বাজারের।
সম্পূর্ণ তৈরির আগেই ২০১১-র ১লা মার্চ বাজার উদ্বোধন করে দেয় রাজ্য বিপণন পর্ষদ। তার পরে নতুন সরকার গঠন হয়েছে, কিন্তু বাজারের নির্মাণ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে স্থায়ী বাজারে ব্যবসায়ীরা কবে জায়গা পাবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন জিঞ্জিরা বাজারের পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, দু’টি ব্লকে বাজার তৈরি হলেও কৃষিজ পণ্যের জন্য যে ধরনের বাজার তৈরির দরকার তা না করে শপিং মলের আকারে বাজার তৈরি হচ্ছে। এতে তাঁদের মতো ব্যবসায়ীরা কতটা লাভবান হবেন?
|
|
জিঞ্জিরা বাজারটি খাতায়-কলমে ৩৭ বছরের পুরনো। যদিও বাজার বসছে তারও বহু আগে থেকে। তারাতলা রোডের উপর বিরাট এলাকা জুড়ে পাইকারি ও খুচরো এই বাজারে দূরদূরান্ত, এমনকী, ভিন রাজ্য থেকেও প্রতি দিন আনাজপাতি নিয়ে ভিড় জমান ব্যবসায়ীরা। মূলত চাষিদের কাছ থেকে কিনে এনে ব্যবসায়ীরা এই পাইকারি সব্জি বাজারে বসেন। সব্জি ছাড়াও রয়েছে জামাকাপড়, জুতো, মিষ্টি থেকে শুরু করে নানা সামগ্রীর পসার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাজারটি চলে। কিন্তু ভবিষ্যতে তারাতলা রোড সম্প্রসারিত করা হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদেরই অন্য একটি জায়গা সরকারকে লিজ দেন রাস্তার উপর থেকে বাজারটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এর পরে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের অধীন কৃষি বিপণন পর্ষদ উদ্যোগী হয় স্থায়ী বাজার তৈরির। টেন্ডারের মাধ্যমে একটি ঠিকাদারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাজারটি তৈরির জন্য।
বাজার তৈরি শুরুও হয়। জানা গিয়েছে, রাজ্য বিপণন পর্ষদ ঠিকাদারি সংস্থার মাধ্যমে বাজারটি তৈরি করলেও বাজারে কারা কী ভাবে জায়গা পাবেন তা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বাজার সমিতির হাতে। পরে সরকার পরিবর্তিত হলে কলকাতা পুলিশের এলাকার অন্তর্গত প্রতিটি বাজার চলে আসে কলকাতা বাজার সমিতির অধীনে।
|
|
এই অবস্থায় ‘হেমন্ত বসু মার্কেট সমিতি’র সম্পাদক অজিত মাঝি-র প্রশ্ন, “বাজারটি তৈরির আগেই কেন তাড়াহুড়ো করে উদ্বোধন করা হল?” তাঁর বক্তব্য, বর্তমানে এলাকাটি কলকাতা বাজার সমিতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়ায় কত জন ব্যবসায়ী কোথায়, কী ভাবে জায়গা পাবেন তা নিয়েও তাঁরা চিন্তিত। হেমন্ত বসু মার্কেটে বর্তমানে মোট ৪১২ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সূত্রে জানা গিয়েছে, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বাজার সমিতির পক্ষ থেকে বাজার উদ্বোধনের আগে জিঞ্জিরা বাজারের ব্যবসায়ী সমিতিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। বাজার সম্পূর্ণ হলে বাজারের ৩৮৯ জন ব্যবসায়ীকে সেখানে জায়গা দেওয়ার কথা চিঠিতে বলা হয়। কিন্তু গত এক বছরে খুব ধীর গতিতে বাজার তৈরির কাজ এগনোয় চিন্তিত ব্যবসায়ীরা।
|
|
বর্তমানে স্থায়ী বাজারটি দু’টি ব্লকে তৈরি হচ্ছে এবং সেটি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে একসঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হবে। এ-ব্লকের নির্মাণটি চার তলা এবং বি-ব্লকটি বেসমেন্ট-সহ তিন তলা হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ওই দু’টি ব্লকের যে নকশা তাতে ৪১২ জনকে জায়গা দেওয়া যাবে না। তাঁদের আরও দাবি, নকশা পাল্টে সঠিক ভাবে নির্মাণ হলে ৪১২ জনকেই বাজারে জায়গা দেওয়া যাবে এবং যে উদ্দেশে রাস্তা থেকে সরিয়ে স্থায়ী বাজার তৈরি হচ্ছে সেটি সফল হবে।
হেমন্ত বসু মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রাজ্যের কৃষিবিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “আর্থিক সমস্যার জন্য কাজ এগোতে দেরি হচ্ছে।
সমস্যা মিটলেই আশা করছি বাজারটি সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|