পূর্ব কলকাতা
যুবভারতী
এ তো খেলা নয়
র‌্যাম্পের ধারে ফাঁকা জায়গায় ফেলে দেওয়া খাবারের প্লেট, জলের বোতল, খাবারের ছড়াছড়ি। কোনও একটি র‌্যাম্পের আশপাশেই শুধু এই অবস্থা নয়, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন চত্বরের বিভিন্ন র‌্যাম্পের ধারে এ ভাবেই আবর্জনার স্তূপ পড়ে। পাশাপাশি, নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে অনেক জায়গাতেই কার্যত জঙ্গল তৈরি হয়েছে।
নতুন সরকার দায়িত্বে আসার পরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের বেহাল দশা ঘোচাতে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। একেবারে কাজ যে হয়নি এমনটা নয়, নতুন করে রাস্তা মেরামত হয়েছে। র্যাম্পগুলি চলাচলযোগ্য করে তোলাও হয়েছে। এই পর্যন্ত উন্নয়ন স্পষ্ট। কিন্তু আবর্জনা থেকে মুক্ত হল না যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন চত্বর।
একই সঙ্গে কোথাও জঙ্গল আবার কোথাও নতুন করে ডেকরেটরের মালপত্র রাখার জন্য অস্থায়ী ঘর তৈরি হয়েছে। আবর্জনা যে নিয়মিত সাফ হয় না তা-ও যুবভারতী চত্বরের হাল থেকে স্পষ্ট। প্রাতর্ভ্রমণকারী থেকে নিত্য যাতায়াতকারীদের অভিযোগ, আবর্জনা সাফাইয়ের হাল আদৌ ফেরেনি।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন চত্বরে নিয়মিত প্রাতর্ভ্রমণ করেন বেলেঘাটার বাসিন্দা নিত্য সাহা। তাঁর কথায়: “নতুন সরকার আসার পরে ভেবেছিলাম উন্নয়ন হবে। ক্রীড়াঙ্গনের ভিতরে রাস্তাটির বেহাল দশা ছিল। তা মেরামত করা হয়েছে। ফলে আমাদের সুবিধা হয়েছে। কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনের অন্যত্র, বিশেষত, র্যাম্প ও ফাঁকা জায়গায় জঞ্জাল জমে থাকে। তা সাফ করার কোনও ব্যবস্থা হল না।”
বিধাননগরের বাসিন্দা আশিস ভট্টাচার্য এখানে নিয়মিত প্রাতর্ভ্রমণ করেন। তাঁর অভিজ্ঞতা, “সাফাই ব্যবস্থাই নেই। এই স্টেডিয়ামে বড় কোনও খেলা কিংবা অনুষ্ঠান থাকলে পর দিন আবর্জনায় ভরে যায় চার দিক। আমাদের গর্ব এই স্টেডিয়াম। অথচ সেখানে সাফাইয়ে গাফিলতির শেষ নেই।”
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের এখনকার চেহারাটা ঠিক কী রকম?
স্টেডিয়ামের মূল প্রবেশপথ, অর্থাৎ ভিআইপি গেট থেকে ৩ নম্বর গেটের দিকে হাঁটলে ডান দিকে জঙ্গল কিংবা আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়বে। সেখানেই শেষ নয়, ২ নম্বর গেটের আশপাশের র‌্যাম্পগুলির চারধারেও একই অবস্থা। ক্রীড়াঙ্গন চত্বরে বেশ কিছু দোকান আছে। সে সব আবর্জনাও জমতে থাকে ক্রীড়াঙ্গন চত্বরে। যদিও দোকানদারদের দাবি, তাঁরা আবর্জনা জড়ো করে ভ্যাটের মধ্যে ফেলেন। কিন্তু ভ্যাট কোথায়? ক্রীড়াঙ্গন চত্বরে হাতে গোনা কয়েকটি জায়গায় রাখা কন্টেনারে যতটা না আবর্জনা রাখা, তার চেয়েও তার বাইরে স্তূপীকৃত ময়লা। ১ নম্বর গেট দিয়ে ক্রীড়াঙ্গনের ভিতরে গেলে আশপাশের জঙ্গল কিংবা আবর্জনার ছবিটাও স্পষ্ট।
ক্রীড়াঙ্গনে নিয়মিত খেলা দেখতে আসা অনেকেরই দাবি, প্রতিটি র‌্যাম্পের মধ্যে অনেকটা জমি আছে। সেখানে কোথাও বাঁশ ও নির্মাণসামগ্রী পড়ে রয়েছে, কোথাও আবর্জনার স্তূপ। নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে কোথাও আবার রীতিমতো জঙ্গল তৈরি হয়েছে। যুবভারতী চত্বরের এই বেহাল দশার কথা স্বীকার করে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র বললেন, “এখানে ময়লা জমেছে। যুব উৎসব ও আরও ন্যাশনাল ইভেন্ট ছিল। তবে দ্রুত সাফাইয়ের কাজ হবে। কিন্তু যুবভারতী রোজ সাফাই করতে চারশো-পাঁচশো লোক লাগবে। তা নেই। তবে আমরা আউটসোর্সিং করে সমস্যা সমাধান করব।”

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.