|
|
|
|
সিগন্যালের ভুলে ট্যাঙ্কারে পিষ্ট শিশু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দীর্ঘদিন মেরামতি হয়নি খারাপ হয়ে যাওয়া পুরনো ট্রাফিক সিগন্যাল। সেই ‘উদাসীনতা’রই মাসুল গুনল তিন বছরের একটি শিশু।
সিগন্যাল লাল থেকে হলুদ না হয়ে সরাসরি সবুজ হয়ে গিয়েছিল। রাস্তার ক্রসিং-এ দাঁড়িয়ে থাকা সমস্ত গাড়িও চলতে শুরু করেছিল মুহূর্তের মধ্যে। ঠাকুমার সঙ্গে স্কুল থেকে ফেরা একরত্তি ছেলে তা বুঝতেই পারেনি। সব গাড়ি থেমে আছে ভেবে ঠাকুমার হাত ছেড়ে রাস্তার ওপারে নিজের বাড়ির দিকে ছুট লাগিয়েছিল সে। কিন্তু বাড়ি পৌঁছনো আর হল না। কলকাতার দিক থেকে আসা একটি তেলের ট্যাঙ্কারের চাকার তলায় পড়ে গুরুতর আহত হয় শিশুটি। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ও কারি রোড ক্রসিংয়ের কাছে। মৃত শিশুটির নাম জিলান লস্কর (৩)। বাড়ি কোনা এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই ৩ নম্বর শেখপাড়া লেনে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ঠাকুমা নাসিমা বিবির সঙ্গে কারি রোডের একটি অঙ্গনওয়াড়ি স্কুল থেকে খিচুড়ি খেয়ে ফিরছিল জিলান। তখনই এই দুর্ঘটনা। রক্তাক্ত শিশুটিকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান বাড়ির লোকজনই। এই ঘটনার জেরে কারি রোডের মোড়ে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ট্যাঙ্কারের চালক গাড়িটি ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পুলিশ গাড়ির খালাসিকে আটক করেছে পুলিশ। গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বরজান লস্কর বলেন, “আসলে জিলান ঠাকুমার হাত ছেড়ে হুড়মুড় করে রাস্তা পেরোতে যায়। তেল ট্যাঙ্কারটির সামনে গিয়ে পড়ায় চালক আর গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। ওকে চাপা দিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে উঠে পড়ে ট্যাঙ্কার।” স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল শেখ বলেন, “ট্রাফিক সিগন্যাল ঠিক মতো কাজ না করার কারণে এই মোড়ে এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এখানে সিগন্যাল লাল থেকে সরাসরি সবুজ হয়ে যায়। ফলে সব গাড়ি সঙ্গে সঙ্গে চলতে শুরু করে। আজও তা-ই ঘটেছিল।” সিগন্যালের গোলমালের কথা স্বীকার করে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “আসলে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সিগন্যাল ব্যবস্থা অনেক দিনের পুরনো। মেরামত করা প্রয়োজন। আমরা এগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি।” |
|
|
|
|
|