|
|
|
|
একশো দিনের কাজে গতি আনতে পদক্ষেপ হুগলিতে |
সরকারি দফতরের ‘মেলবন্ধনে’ জোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
একশো দিনের কাজে গতি আনতে বদ্ধ পরিকর নতুন সরকার। সুব্রত মুখোপাধ্যায় পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্ব পাওয়ার পরে সেই কাজে আরও বেশি করে নজর দিচ্ছেন। একশো দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি দফতরের ‘মেলবন্ধনের’ কাজ হুগলি জেলায় এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। কিন্তু এই উদ্যোগ কিছু দিনের মধ্যেই গতি পাবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। যার ফলে একশো দিনের কাজে পিছিয়ে পড়া এই জেলা আরও ভাল ফল করবে বলে প্রশাসনের কর্তাদের আশা।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে অন্যান্য গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের মেলবন্ধন-সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা এসেছিল ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে। মেলবন্ধনের ফলে বিপুল পরিমাণ কাজ সৃষ্টি এবং টাকা খরচের নিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও গত তিন বছরে কেন তা রূপায়িত হয়নি? প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, মূলত ‘উদ্যোগের অভাব’ই এর কারণ।
জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন বলেন, “মেলবন্ধনের ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত অসুবিধা কাটাতে কিছু সময় গিয়েছে। অন্য দফতরগুলিকে পৃথক একশো দিনের কাজের প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট খুলতে হচ্ছে। প্রশিক্ষণও নিতে হচ্ছে। পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনগুলির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে হচ্ছে। এমন বহু কাজ আছে।”
গত ডিসেম্বর মাসে অবশ্য সেচ দফতরকে সংযুক্ত করে চুঁচুড়া (সদর) মহকুমার পোলবা-দাদপুর ব্লকের রাজহাট পঞ্চায়েত এলাকায় সরস্বতী নদীবাঁধ সংস্কারের ২ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকার প্রকল্পের কাজ হয়েছিল। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে মেলবন্ধনের কাজ বিশেষ এগোয়নি। চুঁচুড়ার (সদর) মহকুমাশাসক জলি চৌধুরী জানান, পরীক্ষামূলক ভাবে ছোট কাজ করে মেলবন্ধনের বাস্তবতা প্রমাণ করা গিয়েছে। কিন্তু মেলবন্ধনের কাজে সামগ্রিক গাফিলতি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এ নিয়ে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। তা ছাড়া, যে সরকারি দফতরগুলির সঙ্গে মেলবন্ধন প্রয়োজন, সেই সেচ-ক্ষুদ্র সেচ-কৃষি-মৎস্য প্রভৃতি দফতরের উপরে সরকারি চাপও নেই।” জেলাশাসক জানান, সদর মহকুমায় ছোট একটি উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে মেলবন্ধনের কাজ শুরু হলেও কিছু দিনের মধ্যেই আরামবাগ মহকুমায় মূল কাজের সূত্রপাত হবে। আরামবাগ এবং খানাকুলের ১ ও ২ ব্লকে নদীবাঁধগুলির অন্তত ১২টি জায়গায় সংস্কারের কাজ কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “এই মহকুমা মূলত নদীবাঁধকেন্দ্রিক। দ্বারকেশ্বর, মুণ্ডেশ্বরী, দামোদর তো আছেই খানাকুলের দক্ষিণ প্রান্ত ছুঁয়ে গিয়েছে রূপনারায়ণ। সেচ দফতরের সঙ্গে মেলবন্ধনে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে প্রচুর কাজ সৃষ্টি হবে।” একই সঙ্গে ক্ষুদ্র সেচ এবং মৎস্য দফতরও সংযুক্ত প্রকল্পের কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একশো দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে অন্য দফতরের মেলবন্ধনের কারণে শুধু যে প্রচুর কাজ সৃষ্টি হবে তা-ই নয়, বিপুল পরিমাণ টাকা খরচের নিশ্চয়তাও আছে। সেই সঙ্গে কর্মসূচি রূপায়ণে স্বচ্ছতা রাখতে উন্নতমানের উপযোগী স্থায়ী সম্পদও সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। যদিও ‘মেলবন্ধন’ নিয়ে সরকারি অন্য দফতরগুলির ‘গড়িমসি’ মিটেছে বলা চলে না। হুগলির সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ চক্রবর্তী যেমন বলেন, “আমরা অনেক প্রকল্প জমা দিয়েছি। টাকা পেলেই কাজ শুরু করব। কিন্তু একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নিয়ম-নীতি এবং পরিকাঠামোই বাধা।” সরকারি নির্দেশিকা পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে তাঁর মত। |
|
|
|
|
|