|
|
|
|
|
|
|
আপনার সাহায্যে... |
|
লেপের আরাম আর নয় |
তুলোর গদি বা বালিশ থেকেও অ্যালার্জি হয়। সাবধান করলেন
ডা. দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। লিখছেন সুজাতা মুখোপাধ্যায়। |
শীতের এই ক’দিন দেখছি, ঘুম থেকে উঠেই নাক বন্ধ, হাঁচি....।
লেপ গায়ে দিয়ে ঘুমোচ্ছেন তো? বা তুলোর গদিতে, বালিশে? এ থেকে তো অ্যালার্জি হয়।
ঠিক বলেছেন। বিছানা থেকেই মনে হয় যত সমস্যা। সমাধান কী?
অ্যালার্জেন ফ্রি বিছানা-বালিশ তো পাওয়া যায় আজকাল। সম্ভব না হলে তুলোর জিনিসপত্র এড়িয়ে যান। বিছানার চাদর, বালিশের ঢাকা সপ্তাহে এক বার গরম জলে কেচে রোদে শুকিয়ে নিন। ওয়াশিং মেশিনে কাচলে কিন্তু হবে না।
সে কী!
হ্যাঁ, এই জীবাণু ওয়াশিং মেশিনে মরে না।
জীবাণু তো বাড়িময়। বইপত্র, কাগজ ঘাঁটাঘাঁটি বা একটু ঝাড়াঝাড়ি করলেও মারাত্মক সমস্যা হয়।
এ এমন কী ব্যাপার! মাস্ক পরে নিন।
রাস্তাতেও কি মাস্ক পরে বেরোব? একটা বাস পাশ দিয়ে হুশ করে চলে গেলেই তো শুরু হয়।
হ্যাঁ, শীতে অনেকের সমস্যা বাড়ে বটে। কারও চলে বছরভরই। তা চিকিৎসা করাচ্ছেন না কেন?
চিকিৎসা তো লেগেই আছে। নাকের ড্রপ, অ্যান্টিঅ্যালার্জিকের সঙ্গেই তো বাস।
সে জন্যই এত সমস্যা। অপেক্ষা করুন। হাঁপানিও এল বলে!
মানে?
মানে আর কী? রোগটাকে পুষে রাখছেন। হাঁপানি, নাকে পলিপ কত কী হতে পারে এ থেকে!
তা করবটা কী? ডাক্তার দেখান। নাকে স্টেরয়েড স্প্রে নিতে হবে।
স্টেরয়েড!
ভয়ের কিছু নেই। লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। |
|
যোগাযোগ ৯৮৩০০৪৮৫০৬ |
|
কত দিন নিতে হবে? কতটা সমস্যা তার উপর নির্ভর করে টানা ৬ মাস থেকে এক বছর।
সেরে যাবে?
৩-মাস ভাল থাকবেন।
তারপর আবার তো এক দিন হঠাৎ শুরু হবে। তখন?
একটা লিভোসেট্রিজিন বা ফেকসোফেনাডিন খেয়ে আবার নতুন করে চিকিৎসা শুরু করবেন।
খুবই হতাশাজনক ব্যাপার।
একেবারেই না। কী থেকে সমস্যা হচ্ছে তা যদি বুঝতে পারেন সেটা বাদ দিলে রোগ আর হবেই না।
কী থেকে আর হয়! ঘরে-বাইরের ধুলো থেকেই তো যত সমস্যা। এই যে নানা রকম মেলা হয়, বইমেলা আসছে, গেলেই এক ধাক্কায় রোগ বেড়ে যায়।শুধু এটুকু হলে তো সমস্যা কম। মাস্ক পরে বা নাকে রুমাল চাপা দিলেই বাঁচতে পারবেন।
কী যে বলেন! মাস্ক পরে বইমেলায়! সে যাক, আর কী কী থেকে সমস্যা হয়, সেটা বলুন।
লম্বা লিস্ট। পোষা কুকুর, বেড়াল, পাখি, গাছের পরাগ, ফুলের গন্ধ। ধান গাছের কাছাকাছি গেলে হয় অনেকের। কিছু কসমেটিকস, পারফিউম। স্যাঁতসেঁতে ঘর। প্রচুর খাবার-দাবার, ওষুধ। নতুন জামা-কাপড়ে সমস্যা হয় অনেকের। অনেকের আবার একাধিক জিনিসে অ্যালার্জি থাকে। তখন মুশকিল।
অ্যালার্জি টেস্ট আছে না?
আছে। কিন্তু তা থেকে সব সময় নিশ্চিত করে বোঝা যায় না।
ভ্যাকসিন না কি বেরিয়েছে?
আছে। তবে সব সময় কাজ হয় না।
তাহলে কাজ হয় একমাত্র স্টেরয়েডে? স্প্রে নিয়ে নেব?
না, সে ভাবে হবে না। কষ্ট থাক না থাক রোজ নিয়ম করে নিয়ে যেতে হবে। আস্তে আস্তে রোগটা ভেতর থেকে কমবে।
যত দিন না কমছে?
ওই যে আগে বললাম, নাক বন্ধ হয়ে গেলে বা হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়া শুরু হলে লিভোসেট্রিজিন বা ফেক্সোফেনাডিন খেয়ে নেবেন।
ঘুম থেকে উঠেই তো সমস্যা শুরু হয়। তখন এ সব খাওয়া মানে আবার ঘুমকে ডেকে আনা।
এ সবে আজকাল আর তেমন ঘুম পায় না। অভ্যেস থাকলে পায় না।
ড্রপ দিলে হয় না?
বাড়াবাড়ি হলে অ্যান্টিঅ্যালার্জিকের সঙ্গে কয়েক দিন জাইলোমেটাজোলিন ড্রপ দিতে হয়। সমস্যা কমতে শুরু করা মাত্র প্রথমে ড্রপ বন্ধ হয়। তার ক’দিন পর খাওয়ার ওষুধ। কারণ ড্রপের নানা সমস্যা। প্রথম তো বদ অভ্যাস হয়ে যায়। না নিলে আর চলে না। আবার নিয়মিত নিলে নাকের মধ্যে যে দুটি মাংসপিণ্ড আছে তারা ফুলে পুরো নাক বন্ধ করে দেয়।
তখন উপায়?
বাড়াবাড়ি হলে অপারেশন করতে হয়। না হলে ড্রপ বন্ধ করে স্টেরয়েড স্প্রে। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়।
অর্থাৎ সারা জীবনের জন্য স্টেরয়েড স্প্রে সঙ্গী?
ওই যে বললাম, কী থেকে কী হচ্ছে তা ধরতে পারলে ওষুধ ছাড়াই ভাল থাকবেন। এটা জরুরিও। কারণ খুব বেশি দিন স্টেরয়েড ব্যবহার করলে নাকের ভেতরটা শুকিয়ে রক্ত পড়তে পারে। তখন নানা রকম মলম দিয়ে আবার তাকে সামলাতে হয়।
আজকাল তো ঘরে-বাইরে এসি।
নিয়মিত সার্ভিসিং হলে এসিতে সমস্যা কমার কথা। না হলে ধুলো নয়, সমস্যা হচ্ছে অন্য কিছু থেকে। |
|
|
|
|
|