নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে এ বার ‘ইউনিফায়েড কমান্ড’ নামাতে চলেছেন কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সব স্টেশনে বসবে লাগেজ স্ক্যানার এবং হাই রেজল্যুশন নাইট ভিশন ক্যামেরাও।
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে মেট্রোর সুরক্ষা ‘রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোসর্’ (আরপিএফ) এবং ‘মেট্রো রেল পুলিশ’ (এমআরপি)-এর হাতে থাকায় কিছু ক্ষেত্রে বোঝাপড়ার সমস্যা হচ্ছে। তার সমাধানে কিছু দিনের মধ্যেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৭৭১ জন আরপিএফ-কে নিয়ে ‘ইউনিফায়েড কমান্ড’ তৈরি করা হবে। গত বছরের মাঝামাঝি রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর এবং রেলমন্ত্রকের মধ্যে মেট্রোর নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করার জন্য বৈঠক হয়। তখনই ঠিক হয় মেট্রোর নিরাপত্তা একক ফোর্সের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। রেল বোর্ড ছাড়পত্রও দিয়েছে ইউনিফায়েড কমান্ড নামানোর জন্য। তাই কিছু দিনের মধ্যেই মেট্রোর সুরক্ষার সম্পূর্ণ দায়িত্ব চলে যাবে আরপিএফ-এর হাতে।
বর্তমানে প্রতিটি মেট্রো স্টেশনে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সাধারণত আরপিএফ এবং এমআরপি-র যৌথবাহিনী এই কাজে যুক্ত। প্রতিটি স্টেশনে ঢোকার মুখে থাকেন রাজ্য সরকার থেকে নিযুক্ত এমআরপি-র অর্ন্তভুক্ত নিরাপত্তাকর্মীরা। এমআরপি-র মধ্যে রয়েছেন পুরুষ হোমগার্ড, মহিলা হোমগার্ড, রাজ্য পুলিশের আইবি-সহ সিভিল গ্রিন পুলিশ। মেট্রোয় ঢোকার মুখে দু’জন এমআরপি ছাড়াও টিকিট পাঞ্চিং গেটের আগে থাকেন এক জন আরপিএফ, মহিলা ও পুরুষ হোমগার্ড এবং সিভিল গ্রিন পুলিশ। তাঁরা সাধারণত যাত্রীদের ব্যাগ পরীক্ষা করেন। ‘ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর’ গেটে ঢোকার আগে এই চেকিং হয়। আর এই পুরো নজরদারি ব্যবস্থা দেখভালের দায়িত্বে থাকেন স্টেশন মাস্টার, মেট্রো ভবনের সিকিউরিটি রুম এবং এমআরপি কন্ট্রোল রুম। এ ছাড়াও প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে দু’জন করে সশস্ত্র আরপিএফ থাকেন। অর্থাৎ, আপ এবং ডাউন মিলিয়ে প্রতিটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকেন চার জন সশস্ত্র আরপিএফ।
এ বার এই ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাই চলে আসবে আরপিএফ-এর হাতে। প্রাথমিক পর্যায়ে ২৩টি স্টেশনের মূল গেটে থাকবে লাগেজ স্ক্যানার। ঢোকা এবং বেরোনোর গেটে বসানো হবে হাই রেজল্যুশন নাইট ভিশন ক্যামেরা। এই ক্যামেরা প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন জায়গাতেও লাগানো হবে। এতে প্রত্যেক যাত্রীর চলাফেরার উপরে নজর রাখা যাবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।
নতুন এই সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জেনারেল) প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, ‘‘রেলের ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছি। প্রয়োজনীয় ৭৭১ জন আরপিএফ-কে পাওয়া গেলেই কলকাতা মেট্রোর সামগ্রিক সুরক্ষা পুরোপুরি রেলের হাতে চলে যাবে। এতে নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো হবে বলে আশা করছি।” |