আগরায় খুন, ধৃত কলকাতার ছাত্র
সোনার ইটের লোভে আগরার একটি হোটেলে এক ব্যক্তিকে খুন করে অবশেষে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে গেল এক কলেজছাত্র এবং তার তিন বন্ধু। বৃহস্পতিবার রাতে শিয়ালদহের কোলে মার্কেট এলাকা থেকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ (স্পেশাল টাস্ক ফোর্স) এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
এসটিএফ জানায়, ২০১১ সালের ১৮ নভেম্বর আগরার ওই হোটেলের একটি ঘর থেকে হাসান আলি (৪৫) নামে মথুরার এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। ১৬ নভেম্বর শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানতে পারে, হাসান লোক ঠকিয়ে বেড়াতেন। উত্তর ২৪ পরগনার এক যুবককে সোনার ইট দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তিনি ডেকে এনেছিলেন। সোনার ইটের লোভে ওই যুবক এবং তার বন্ধুরা হাসানকে শ্বাসরোধ করে খুন করে পালিয়ে যায়। অথচ হাসানের কাছে সোনার ইট ছিলই না। যে ব্যাগে সেটি রয়েছে বলে হাসান ওই যুবকদের দেখিয়েছিলেন, সেই ব্যাগ খুলে কয়েকটি ইট-পাথর উদ্ধার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
এসটিএফ জানায়, ধৃত ছাত্রের নাম অরুণাভ রায় (২৪)। বঙ্গবাসী কলেজের ফিজিওলজি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়ার বাবা আমডাঙা বিডিও অফিসে কাজ করেন। অন্য তিন ধৃত মহম্মদ শরিফ লস্কর (২৩), সইফুল মণ্ডল (২২) এবং মস্ত মণ্ডল (২৩) পেশায় দিনমজুর। অরুণাভ ও তার বন্ধুরা আমডাঙার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, জেরায় অরুণাভ জানিয়েছে, ২০১১-র নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি তার মোবাইলে এক ব্যক্তি ফোন করে জানান, তাঁর নাম রাজীব শর্মা (আসল নাম হাসান আলি, যিনি আগরার হোটেলে খুন হন)। কলকাতার এক বন্ধুকে ফোন করতে গিয়ে তিনি ভুল করে অরুণাভকে ফোন করেছেন। ওই ব্যক্তি অরুণাভকে বলেন, তিনি খুব মুশকিলে পড়েছেন। কারণ, মথুরায় তাঁদের পুরনো বাড়ি ভাঙার সময়ে সাতটি সোনার ইট বেরিয়েছে। সেগুলি তিনি বিক্রি করতে চান। মথুরা পুলিশের নজর এড়িয়ে তিনি ইটগুলি কোথাও নিয়ে যেতে পারছেন না। অরুণাভ যদি কলকাতায় সেগুলি নিয়ে এসে ঠিক দামে বিক্রি করতে পারে, তা হলে অর্ধেক টাকা তিনি তাকে দেবেন বলে আশ্বাস দেন ওই ব্যক্তি।
পুলিশের অভিযোগ, অরুণাভ তিন বন্ধুকে নিয়ে প্রথমে দিল্লি, সেখান থেকে আগরা পৌঁছে ওই হোটেলে ঘর নেয়। মথুরা থেকে ডেকে পাঠায় রাজীব শর্মা ওরফে হাসান আলিকে। সোনার ইট আদায় করার লোভে তাঁকে খুনের ছক কষে অরুণাভরা। সেই মতো হাসান একটি ব্যাগ কাঁধে ঘরে ঢুকতেই তাঁর মুখে গামছা গুঁজে দেয় তারা। পরে অন্য গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে।
কী করে ধরা পড়ল অরুণাভরা? উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানায়, আগরার যে হোটেলে অরুণাভ ছিল, সেখানকার খাতায় সে লিখেছিল, ‘সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি সল্টলেক।’ যোগাযোগের নম্বর হিসেবে নিজের মোবাইল নম্বরের সংখ্যাগুলিই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে লেখে সে। সংখ্যা ঘুরিয়েফিরিয়ে নম্বরটি যাচাই করতে করতেই অরুণাভর আসল নম্বরের হদিস মেলে। জানা যায়, অন্য এক জনের নামে ফোনের সিমকার্ড নেওয়া হলেও ফোনটি ব্যবহার করছে অরুণাভই। তবে পুলিশের ভয়ে তারা আমডাঙায় থাকছে না, থাকছে কলকাতায়। এসটিএফ জানায়, এর পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ওই নম্বরে আড়ি পেতে এসটিএফ জানতে পারে, শিয়ালদহের একটি লজের কাছে বৃহস্পতিবার রাতে জড়ো হবে অরুণাভ ও তার বন্ধুরা। সেখানে পৌঁছনোমাত্রই তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.