|
|
|
|
রবীন্দ্র সংগ্রহশালা বন্ধ দীর্ঘদিন, হতাশ পর্যটক |
অরুণ মুখোপাধ্যায় • শান্তিনিকেতন |
কথা ছিল সংস্কারের জন্য স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের ‘অস্থায়ী’ সংগ্রহশালা দিন কুড়ি বন্ধ থাকবে। পর্যটকদের জন্য ২০১০ সালের ৬ অগস্ট থেকে ওই সংগ্রহশালাটি খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরে বেশ কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। শেষ হয়ে গিয়েছে পৌষমেলাও। কিন্তু সংগ্রহশালাটি খোলেনি। কবে খোলা হবে তা পরিষ্কার করে কেউ বলতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ বিচিত্রা ভবনের নীচের তলায় থাকা সংগ্রহশালা থেকে নোবেল পদক চুরি যাওয়ার কথা জানা যায়। এর পরে দীর্ঘদিন সংগ্রহশালাটি বন্ধ থাকে। পরে দ্বিতলে অস্থায়ী ভাবে সংগ্রহশালা স্থানান্তরিত হয়।
সংগ্রহশালা খোলার ক্ষেত্রে জটিলতা কোথায়?
রবীন্দ্রভবনের সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ বন্ধ রয়েছে গত বছর পুজোর পর থেকে। একটি বেসরকারি সংস্থা ওই কাজের বরাত পেয়েছিল। কিন্তু কাজ সম্পূর্ণ না করে ওই সংস্থা চলে গিয়েছে। কাজের বরাত পাওয়া ওই সংস্থার ম্যানেজার নারায়ণ চক্রবর্তী জানান, সংগ্রহশালাটি সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছিল। যেমন-রঙের কাজ, কোন জিনিস কোথায় থাকবে তার কাজ চলছিল। তাঁর বক্তব্য, “এই সব কাজের জন্য হঠাৎ কোনও জিনিস কেনার প্রয়োজন হলে বিশ্বভারতীর অডিট দফতর থেকে অনুমতি মিলতে প্রচুর সময় লেগে যাচ্ছে। প্রস্তাব পাঠানো হলেও অডিট দফতর থেকে সেই প্রস্তাব রবীন্দ্র ভবনে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” |
|
সংগ্রহশালার বাইরে বিজ্ঞপ্তি। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। |
বিশ্বভারতীর অডিট দফতরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কালিকারঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাজের ক্ষেত্রে নিয়ম না মানার কারণে কিছু প্রস্তাব রবীন্দ্রভবনে ফেরত পাঠানো হয়েছে।” তবে রবীন্দ্রভবনে সংস্কারের কাজ কোন অবস্থায় রয়েছে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্য দিকে, রবীন্দ্রভবনের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কুমকুম ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “যা বলার বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক বলবেন।” তৎকালীন আধিকারিক অমিতাভ চৌধুরী বলেছিলেন, তাঁর কাছে বলার মতো কোনও তথ্য নেই। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক সুরঞ্জন ঘোষ বলেন, “মাস খানেক হল দায়িত্ব পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।” ওই সংগ্রহশালা সাজানোর দায়িত্বে ছিলেন রবীন্দ্রভবনের প্রাধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তের কারণে প্রাধিকারিক পদ থাকলেও তাঁকে বর্তমানে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংগ্রহশালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি কিছু বলতে পারব না।” বিশ্বভারতীর সহউপাচার্য তথা রবীন্দ্রভবনের অধ্যক্ষ উদয়নারায়ণ সিংহ বলেন, “নানা কারণে কাজ ও সংগ্রহশালা বন্ধ আছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ শেষ করে সংগ্রহশালা খোলার ব্যবস্থা করব।”
এ দিকে, এখনও পর্যন্ত সংগ্রহশালা না খোলায় হতাশ হচ্ছেন শান্তিনিকেতনে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। ফরাক্কার দাউদ হোসেন বা কলকাতার সুব্রত ঘোষদের আক্ষেপ, “আমরা জানতাম না সংগ্রহশালা বন্ধ আছে!” |
|
|
|
|
|