উদ্বোধন হয়েছে দিন দশেক আগে। তবে এখনও পরিষেবা মিলছে না জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যাকেন্দ্রে (এসএনসিইউ)। দশ দিন পরেও তালাই খোলা হয়নি ওই ইউনিটের।
জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা ৩৫ টি। বর্তমানে ভর্তি আছে ৪৫টি শিশু। এই কনকনে ঠাণ্ডায় বাকি শিশুদের ঠাঁই হয়েছে মেঝেতে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার হামিদ আলি বলেন, “৬-৭টি শিশু আশঙ্কাজনক। অনেকেরই অক্সিজেন চলছে। এই অবস্থায় ওই ইউনিটটি চালু থাকলে শিশুদের উপকার তো হতই, কিন্তু উদ্বোধন হলেও কর্মীর জন্যই এখনও চালু হয়নি।” |
গুরুতর অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসার জন্য এই ইউনিটের উদ্বোধন হয় ২ জানুয়ারি। সুপার বলেন, “ওই বিশেষ ইউনিটটি চালাতে অন্তত ৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্স দরকার। তার জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে অনুমোদনও রয়েছে। ২ জন চিকিৎসক এলেও অন্য যাদের আসার কথা ছিল তাঁরা কাজে যোগ না দিয়ে অন্যত্র বদলি নিয়েছেন। ফলে ইউনিট চালানো সম্ভব নয়। কবে চালু হবে তাও বলতে পারব না। তবে নতুন চিকিৎসক, নার্স পেতে অন্তত মাস দেড়েক সময় তো লাগবে।”
ধুূলিয়ান থেকে ৬ দিনের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন ফতেজা বিবি। তিনি বলেন, “জন্মের পর থেকেই আমার বাচ্চা অসুস্থ। বিশেষ ধরণের ইউনিটে তার পরিচর্যা দরকার ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।” নওদার রুনেসা বিবির ২৪ দিনের শিশুটি অপুষ্টিজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তবে এই নিয়ে শিশু বিভাগের চিকিৎসকেরা কোন কথা বলতে চাননি। এক চিকিৎসক বলেন, “পরিকাঠামো গড়ে না তুলে ওই ইউনিটের উদ্বোধন করা ঠিক হয়নি।” রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের শিশু বিভাগের অতিরিক্ত অধিকর্তা অমাবসু দাস বলেন, “সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটের জন্য নতুন চিকিৎসক ও নার্স পাঠানো হবে এমন কোনও কথা নেই। জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে যে নার্স ও চিকিৎসকেরা রয়েছেন তাদেরই শিশু পরিচর্যা বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই ওয়ার্ড চালু করতে হবে। নার্স ও চিকিৎসকেরা সমস্তটাই জানেন। বিশেষ বিশেষ রোগে আক্রান্ত শিশুদের কিছু বাড়তি পরিচর্যা প্রয়োজন। রাজ্যের বহু হাসপাতাল থেকেই নার্স ও চিকিৎসকদের কলকাতার কয়েকটি নামী হাসপাতালে এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গিপুর হাসপাতালেও যারা এ ধরণের প্রশিক্ষণ পেয়েছেন তাদের দিয়ে ওই বিশেষ ইউনিট চালু করতে হবে। নতুন কর্মী ও চিকিৎসকের সঙ্কট রাজ্য জুড়েই। জঙ্গিপুরে কবে চিকিৎসক ও নার্স দিতে পারব এখন বলা সম্ভব নয়।” |
হাসপাতালের স্থায়ী সুপার শাশ্বত মণ্ডল দীর্ঘদিনের জন্য ছুটিতে রয়েছেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা অনেক কম। কয়েকটি বিভাগে চিকিৎসকই নেই। স্বভাবতই হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে কাজ চালিয়ে অন্য কোথাও বিশেষ ইউনিটের জন্য কাজ চালানো কতটা সম্ভব জানি না। আমি মাস খানেক পরে হাপাতালে ফিরব। ছুটি থেকে ফিরলে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখব।”
|
ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়। |