নিজস্ব সংবাদদাতা • ব্যান্ডেল |
রাজ্য জুড়ে শিক্ষায়তনে রাজনীতির ‘দাপাদাপি’র মধ্যেই ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্কের নজির হয়ে থাকল ব্যান্ডেলের পশ্চিমবঙ্গ সার্ভে ইনস্টিটিউট। বুধবার ওই কলেজে অধ্যক্ষ অসিতকুমার মান্নার বদলির প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট করে আন্দোলনে নামেন ছাত্রছাত্রীরা। ব্যান্ডেলের লিচুবাগানের জিটি রোড লাগোয়া ওই কলেজে সকাল থেকে প্রায় ঘণ্টা সাতেকের আন্দোলনের জেরে এ দিন অবশ্য শিকেয় ওঠে পঠনপাঠন।
রায়গঞ্জ থেকে রামপুরহাট, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে এসএফআই, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ‘রাজনৈতিক শাসনে’ আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিক্ষক মহলে। গত কয়েক দিনে ক্রমান্বয়ে ঘটে চলা শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় কলেজগুলিতে থমকে গিয়েছে পঠনপাঠন। প্রায় তলানিতে এসে ঠেকা ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের এই পরিবেশে ব্যান্ডেলের ওই কলেজটি যে বাস্তবিকই ব্যতিক্রম, ছাত্রদের ওই আন্দোলন তারই নজির হয়ে থাকল। |
ব্যান্ডেলে পশ্চিমবঙ্গ সার্ভে ইনস্টিটিউটের সামনে ছাত্রদের বিক্ষোভ। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
এ দিনের ছাত্র ‘আন্দোলন’কে ‘বাস্তবিকই নজিরবিহীন’ বলছেন চুঁচুড়ার প্রাক্তন সাংসদ সিপিএমের রূপচাঁদ পাল। তিনি বলেন, “কলেজে ছাত্রদের শিক্ষক নিগ্রহের একের পর এক ঘটনার মাঝে ব্যান্ডেলের ওই কলেজের ছাত্র আন্দোলন নজিরবিহীন।” স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তপন মজুমদারও মনে করেন, “ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ওই আন্দোলন সে কথাই বলছে।”
ছাত্রছাত্রীদের দাবি, বছর পাঁচেক আগে ওই কলেজে অসিতবাবু যোগ দেওয়ার পরে পড়াশোনার ‘মান’ই নয়, কলেজের ‘সার্বিক পরিবেশের’ও উন্নতি ঘটেছে। তাই অধ্যক্ষের ‘নিয়ম মাফিক’ বদলিও মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। অসিতবাবুর বদলি রুখতে তাই সকালে গেটে তালা ঝুলিয়ে রাস্তার ধারে বেঞ্চ পেতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েকশো ছাত্রছাত্রী।
অসিতবাবু বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই বদলির নির্দেশ এসেছে। কিন্তু কলেজের ছেলেমেয়েরা আমাকে ছাড়তে চাইছে না। আসলে কলেজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ওদের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তো!”
সার্ভে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রিন্টু পাল বলেন, ‘‘অসিতবাবুর সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তা নজিরবিহীন।
সচরাচর দেখা যায় না।” তাঁদের দাবি, রাজ্য জুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে যে ‘রাজনীতির হানাহানি’ চলছে, হুগলির ওই কলেজে তা ভাবতেই পারেন না ছাত্রছাত্রীরা। কলেজে গত পাঁচ বছরে আর্ন্তজাতিক মানের পরীক্ষাগার থেকে গ্রন্থাগার, সিভিল বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। ছাত্রেরা জানান, পাস করে বেরনোর পরে তাঁদের ‘চাকুরি’ পাওয়ার ক্ষেত্রেও অসিতবাবু ‘চেষ্টা’ করে গিয়েছেন। |