|
|
|
|
মুজিব-কন্যাকে নিয়ে আবেগে ভাসল ত্রিপুরা |
আশিস বসু • আগরতলা |
আবেগাপ্লুত ত্রিপুরা। যত না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ত্রিপুরা সফরের জন্য, তার থেকেও বেশি মুজিব-কন্যাকে ঘিরে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে ত্রিপুরা, আগরতলা। নতুন বাংলাদেশের জন্মের পর ত্রিপুরাবাসী চেয়েছিলেন একবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আসুন ত্রিপুরায়। সে ইচ্ছে বোধহয় মুজিবেরও ছিল। কিন্তু এক সামরিক অভ্যুত্থান সব শেষ করে দেয়। আজ বেলা ৩টেয় শেখ হাসিনার বিমান আগরতলার মাটি ছুঁতেই তাই আবেগ আর বাধ মানেনি।
হাসিনার আগরতলা সফরে বেশি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন প্রবীণ নাগরিকরা। মুজিবকন্যাকে দেখার সুযোগ তাই প্রবীণদের অধিকাংশই হাত ছাড়া করতে চাননি। আগরতলায় রাস্তার দু’ধারে হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য প্রবীণ। আর বাংলাদেশের মানুষের কাছে ত্রিপুরার অবস্থানও যে ভারতের অন্য রাজ্যের থেকে আলাদা সে কথা জানাতে ভুললেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কিংবা তাঁর সহকর্মী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মণি। তাঁর কথায়, ‘‘মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার মানুষের সহযোগিতা কখনও অস্বীকার করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকার সে জন্য ভারত তথা ত্রিপুরার কাছে কৃতজ্ঞ।’’
হাসিনার দু’দিনের সফরে সঙ্গি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মণি-সহ ৮৭ জনের প্রতিনিধিদল। এঁদের মধ্যে কয়েক জন সাংসদ, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, সরকারি আধিকারিক এবং সাংবাদিক রয়েছেন। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ভারতের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী কপিল সিব্বল ও মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে ত্রিপুরা রাজ্যের জন্ম হওয়ার পর এই প্রথম এই প্রথম কোনও বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ত্রিপুরার মাটিতে পা রাখলেন।
আগরতলা বিমানবন্দর থেকে সোজা হাসিনার কনভয় চলে আসে রাজ্য অতিথিশালায়। বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজ্যের তরফে সেখানে তাঁকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী কপিল সিব্বল, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, উচ্চশিক্ষামন্ত্রী অনিল সরকার, সিপিএম দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। অতিথিশালায় কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে শেখ হাসিনা প্রজ্ঞাভবনে আসেন। সেখানে কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) আয়োজিত ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য প্রতিনিধিদের বৈঠকে তিনি বক্তৃতা দেন। বৈঠকে ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ কমার্সের প্রতিনিধিরা, ইন্দো-বাংলা চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি এবং সিআইআই প্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও ছিলেন ত্রিপুরা চেম্বার অফ কমার্স এবং ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য মহলের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কাছে ত্রিপুরা হয়ে উঠছে ‘চোখের মণি’। প্রজ্ঞাভবনে হাসিনার বক্তৃতায় ত্রিপুরার গুরুত্ব তাই বার বার সামনে এল। বাংলাদেশ সরকার ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ‘সীমান্ত হাট’ বসানো নিয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান হাসিনা। এমনকী যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ, পালাটনার নির্মীয়মাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে অংশ নিতেও বাংলাদেশ যে রাজি তাও জানান তিনি। উল্লেখ্য, পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সব ভারী যন্ত্রাংশ ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে ত্রিপুরায় আসছে বাংলাদেশের আশুগঞ্জের নদী-বন্দর হয়েই। |
|
|
|
|
|