রাজ্যের কলেজে কলেজে সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় বুধবারের সংযোজন বরাহনগরের ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র কলেজ। এ দিন সেখানে তৃতীয় বর্ষে ভর্তি হতে আসা এসএফআই সমর্থিত এক ছাত্রকে
বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, অরুণাভ মুখোপাধ্যায় নামে ওই ছাত্রকে প্রথমে বরাহনগর ও পরে আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। টিএমসিপি অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
কলেজ সূত্রের খবর, অরুণাভ দু’বছর আগে কলেজের এসএফআই পরিচালিত ছাত্র সংসদের সম্পাদক ছিলেন। এ দিন ছিল তৃতীয় বর্ষে ভর্তির শেষ দিন। অফিসে অরুণাভকে দেখেই এক দল যুবক তাঁকে টানতে টানতে কলেজের বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে রাস্তায় ফেলে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারের চোটে ওই ছাত্রের বাঁ চোখে আঘাত লাগে। ঠোঁট কেটে যায়।
এসএফআইয়ের বরাহনগর ইউনিট কমিটির সম্পাদক গৌতম দাস বলেন, “রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে অরুণাভ কলেজে যায়নি। ভর্তির শেষ দিন বলে আসতে হয়েছিল। তখনই টিএমসিপি সমর্থকেরা তাকে বেধড়ক মারে। তাদের সঙ্গে কয়েক জন বহিরাগতও ছিল। রাস্তায় ও ভাবে এক জনকে মারতে দেখে পাড়ার লোকজন এগিয়ে আসেন। তাঁরা রুখে দাঁড়ানোয় প্রাণে বেঁচে যায় অরুণাভ।” অরুণাভ নিজে পরে বলেন, “নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আর কলেজ-মুখো হতে পারব না। তৃতীয় বর্ষে ভর্তি হতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই সুযোগ হল না। আমার বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”
আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি এই কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। বর্তমানে কলেজের ছাত্র সংসদ এসএফআইয়ের দখলে থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে তাদের সমর্থকেরা ইউনিয়ন রুমে ঢোকার সাহস পান না। দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রের কথায়, “বিধানসভা ভোটের ফল বেরনোর এক মাস পরেই টিএমসিপি ইউনিয়ন রুমের দখল নিয়ে নিয়েছে। প্রতিবাদ করেও ফল হয়নি।” এসএফআইয়ের গৌতম দাসের অভিযোগ, টিএমসিপি-র উদ্দেশ্য এসএফআইকে ভোটে দাঁড়াতে না দেওয়া। তাই তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ২২ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। “টিএমসিপি তার আগে কলেজে আসতে বারণ করছে এসএফআই সমর্থকদের।”
টিএমসিপি-র রাজ্য সম্পাদক সুজিত সাম অবশ্য সব অভিযোগই অস্বাকীর করেছেন। তাঁর বক্তব্য, পুরো ঘটনাটি বানানো। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “ওই ছাত্রটিই সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে টিএমসিপি সমর্থকদের মারধর করে। কলেজে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। টিএমসিপি তার প্রতিবাদ করেছে।” সুজিতের আরও দাবি, ওই কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর মতো
প্রার্থীই নেই এসএফআইয়ের। ঘটনার পরপরই টিএমসিপি-র পক্ষ থেকে বরাহনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অরুণাভকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে এসএফআইয়ের পক্ষ থেকেও এ দিন রাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। |