প্রতিযোগিতার বাজারে ফিরে আসতে ব্যবসার নতুন ছক সাজাচ্ছে বাটা ইন্ডিয়া। দেশ জুড়ে শপিং মল-এর রমরমার বাজারে নিজেদের বিপণন ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে দিতে চলেছে এত দিন প্রথাগত ছকে ব্যবসা করা এই সংস্থা। পাশাপাশি, উৎপাদন ব্যবস্থা আধুনিক করতে কারখানাগুলিও ঢেলে সাজতে চান কর্তৃপক্ষ।
বুধবার কলকাতায় সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজীব গোপালকৃষ্ণন বিপণন বাড়ানোর এই নতুন এক গুচ্ছ পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, “ক্রেতা টানতে অত্যাধুনিক বিপণন কেন্দ্র খোলার উপরেই আমরা বিশেষ জোর দিতে চাই। এ জন্য আগামী এক বছরের মধ্যেই বাটা ইন্ডিয়া ১০০ কোটি টাকা লগ্নি করবে। ওই টাকায় সারা দেশে ১০০টি অতি উন্নতমানের বিপণি খোলার পরিকল্পনা আমরা করেছি। জোর দেওয়া হচ্ছে অনলাইন বিপণনের উপরেও।”
বিপণন বাড়ানোর উদ্যোগে সংস্থা যে সমস্ত দিকে জোর দিচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে:
• ব্র্যান্ড-ভিত্তিক বিপণন কৌশল। বাটার ঝুলিতে আছে নর্থ স্টার, হাশ পাপিজ, বাব্লগামার্স-সহ এক গুচ্ছ ব্র্যান্ড। প্রতিটির উপস্থিতি জোরালো করতে বিপণিগুলিও নয়া ধাঁচে তৈরি করবে সংস্থা। শুধু হাশ পাপিজ বিক্রি করার জন্যই আগামী দু’বছরের মধ্যে সারা দেশে ১৫০টি দোকান চালু করবে বাটা। এর মধ্যে চলতি বছরে খোলা হবে ৩০টি দোকান।
• আগামী তিন-চার বছরে সমস্ত ছোট বিপণি বন্ধ করে বড় মাপের শো-রুম তৈরি করা। ৩০০০ বর্গ ফুটের কম জায়গার দোকান সরিয়ে বড় দোকান তৈরির দিকে নজর দিচ্ছে সংস্থা। দেশ জুড়ে এ ধরনের ছোট দোকানের সংখ্যা ১০০। প্রতি বছর ২০ থেকে ৩০টি ছোট দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে। ছোট দোকানে নিজেদের সব ব্র্যান্ড সাজিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই দোকানের পরিসর বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছে বাটা।
• বিক্রি বাড়াতে অনলাইন বিপণনের বিশেষ বিভাগ খোলা হবে। গোপালকৃষ্ণন বলেন, “অনলাইন বিপণন দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ৭০০ জোড়া জুতো অনলাইন ব্যবস্থায় বিক্রি করছি। সমীক্ষায় দেখেছি, এই পদ্ধতিতে বিক্রি ক্রমেই বাড়বে। তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে চাই।”
• কারখানাগুলি আরও আধুনিক করে তোলা। পাঁচটির মধ্যে বাটানগর, পটনা ও বেঙ্গালুরুর কারখানা ঢেলে সাজার পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে বাটা। গোপালকৃষ্ণন জানান, “এর জন্য ২৫ কোটি খরচ করব।”
• পরিকাঠামো সম্প্রসারণ করে বিশেষ নজর গ্রামাঞ্চলে।
বর্তমানে সারা দেশে বাটার মোট ১২৫০টি দোকান রয়েছে। যে সব অঞ্চলে অন্তত ১ লক্ষ লোকের বসবাস, সেখানেও তাঁরা দোকান খুলবেন বলে জানান গোপালকৃষ্ণন। আগামী দু’বছরের মধ্যে ওই ধরনের অঞ্চলে ২০০টি দোকান খুলবে বাটা। এত দিন কমপক্ষে ৪ লক্ষ লোকের বসবাস নেই, এমন অঞ্চলে বাটা দোকান খুলত না। প্রসঙ্গত, এ দিন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন গোপালকৃষ্ণন। |