নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
ইস্কো সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ায় বাধা কাটাতে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস তথা আইএনটিইউসি সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। প্রয়োজনে সর্বদল বৈঠক ডেকে সমস্যার স্থায়ী সমাধানেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি বার্নপুরে আয়োজিত ইস্পাত কর্মীদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন প্রদীপবাবু। সেখানেই নেতা-কর্মীদের কাছে ইস্কো সম্প্রসারণ প্রকল্পের ব্যাপারে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের কথা জানতে পারেন। প্রদীপবাবু বলেন, “আমরা চাই না সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া বাধা পাক। আবার এ-ও চাই না, গ্রামবাসীরা বঞ্চিত হোন। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার বৈঠক ডেকে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করুক।” পাশাপাশি, প্রদীপবাবুর আরও অভিযোগ, সমস্যা সমাধানে ইস্কো কর্তৃপক্ষেরও আগ্রহের অভাব রয়েছে। তাঁর দাবি, যে কোনও সমস্যারই আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি সম্ভব। এখানে যে কোনও এক পক্ষের সদিচ্ছার অভাব আছে। তাই স্থায়ী সমাধান মিলছে না। সমাধানের রাস্তা বের করতে আইএনটিইউসি সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে তাঁর আশ্বাস।
প্রদীপবাবুর রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি প্রসঙ্গে রাজ্যের আইন ও বিচার মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “তিনি তো নিজেই সরকারে রয়েছেন। তিনি তো নিজেই এই উদ্যোগ নিতে পারেন।” তিনি জানান, সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা ছোট ব্যাপার। গ্রামবাসীদের স্বার্থ বজায় রেখে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে।
হিরাপুর থানার পুরুষোত্তমপুর গ্রাম সংলগ্ন সম্প্রসারণ প্রকল্প এলাকার মধ্যে একটি ধমর্র্স্থানকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাসিন্দাদের বিরোধ বেধেছে। বাসিন্দাদের দাবি, এই জমিটিতে তাঁরা নির্মাণ কাজ করতে দেবেন না। উল্টো দিকে ইস্কো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই জমির উপর দিয়েই তাঁরা রেললাইন পাতবেন। এই টানাপোড়েনে মাঝে-মধ্যেই কাজ ব্যাহত হচ্ছে। গ্রামবাসীরা এখনও ওই ধর্মীয় স্থান ও সংলগ্ন পুকুর ব্যবহার করছেন। বিবাদের জেরে কিছুটা এলাকায় সীমানা পাঁচিলও তোলা যাচ্ছে না। ফলে সম্প্রসারণ প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে বলে ইস্কো কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। পুরুষোত্তমপুর গ্রামীণ ট্রাস্ট কমিটির সম্পাদক চন্দ্রশেখর রায়ের দাবি, ওই জায়গায় তাঁরা পাঁচিল তুলতে দেবেন না। ইস্কো কর্তৃপক্ষ খোঁজখবর নিয়ে জেনেছেন, প্রায় ২০৯ জন জমিদাতা যাঁরা সংস্থায় স্থায়ী চাকরির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। সংস্থার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার জানিয়েছেন, জমিদাতাদের দাম বাবদ টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। চাকরি দেওয়ার প্রশ্ন নেই। ইস্কো কর্তৃপক্ষ জানান, ধর্মস্থানে নির্মাণ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপাতত তাঁরা বিতর্কিত এলাকার বাইরে কাজ করছেন। সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া শেষ করতে হলে ধর্মস্থানটিতেও নির্মাণ করতে হবে। কারখানার নিরাপত্তার জন্য পাঁচিলও তুলতে হবে। ইস্কো আধুনিকীকরণের স্বার্থে তাই তাঁরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চাইছেন বলে জানিয়েছেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। |