উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে ছয় জেলার প্রতিনিধি না থাকা এবং বাছাই করে উন্নয়নের কাজের অভিযোগ তুলে মন্ত্রী গৌতম দেবের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। বৃহস্পতিবার মালদহের উন্নয়ন নিয়ে সার্কিট হাউসে জেলার বিধায়ক এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। সেখানেই কংগ্রেস নেত্রী তথা শ্রমদফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শুধু রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী নন, বৈঠকে একই প্রশ্ন তোলেন জেলার এক আরএসপি বিধায়ক। প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে মালদহ ও দিনাজপুরের একজনও প্রতিনিধি নেই। কোথায় প্রকল্প জমা দেব? কার কাছে জমা দেব? আমরা কি আমাদের এলাকার জন্য টাকা পাব না?” এর পরে মন্ত্রীকে তিনি বলেন, “আপনি উত্তরবঙ্গের অভিভাবক। উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলার সার্বিক উন্নয়ন যাতে হয় তা আপনি দেখবেন। মালদহের সার্বিক উন্নয়ন না করে বাছাই করে উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করা হচ্ছে। মানিকচকে কাজ হচ্ছে।” উল্লেখ্য, মানিকচকের বিধায়ক তৃণমূল নেত্রী তথা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। ক্ষুব্ধ মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ এখন শুধু নামেই কাটছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।” বৈঠকে একই অভিযোগ তোলেন মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক রহিম বক্সি। তিনি বলেন, “আমাদের অন্ধকারে রেখে প্রকল্প হচ্ছে। কীভাবে প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে, আমরা কিছুই জানতে পারছি না। কার কাছে প্রকল্প জমা দেব তাও বুঝতে পারছি না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলার প্রতিনিধি নেওয়া হোক।” জোটসঙ্গী কংগ্রেসের মন্ত্রী এবং বিরোধী বাম বিধায়কের তোলা প্রশ্নে কার্যত অস্বস্তিতে পড়েন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু। পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “উন্নয়ন পর্ষদের কমিটি আমি তৈরি করিনি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। যে জেলার প্রতিনিধি নেই, সেখানে জেলার মন্ত্রীদের বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে পষর্দে রাখা হয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে পর্ষদের বৈঠক করবেন।” গৌতমবাবু জানান, শিলিগুড়ি থেকে মালদহ ও দুই দিনাজপুরের কাজের তদারকি করা যাচ্ছে না। সেইজন্য মালদহ ও দুই দিনাজপুরের জন্য পর্ষদের একটি ‘জোনাল’ অফিস তৈরি করা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, পর্ষদের বামফ্রন্ট আমলের ৩৭১টি প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। ১২৩টি প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু হয়নি। চলতে থাকা কাজ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করা হবে। ওই ১২৩টি প্রকল্প নিয়ে জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হচ্ছে। এতদিন পর্ষদের জেলা ভিত্তিক প্রকল্পের কোনও ডিপিআর (ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট) ছিল না। এবার জেলা ভিত্তিক ডিপিআর ব্যাঙ্ক তৈরি করবে। এখন পযর্ন্ত উত্তরবঙ্গের ৬ জেলার ১৫৯ কোটি টাকার ডিপিআর পর্ষদে জমা পড়েছে। |