কোথাও সেতু বেহাল। কোথাও খানাখন্দে ভরা রাস্তা। বেহাল সেতু কিংবা রাস্তা পেরোতে গিয়ে নিত্যদিন নাকাল হতে হচ্ছে যাত্রীদের। সেই বেহাল রাস্তা ও সেতু মেরামতির দাবিতে ডিওয়াইএফও জেলা জুড়ে অবরোধে নামায় নাকাল হতে হল নিত্যযাত্রীদের। বৃহস্পতিবার জেলার জলঢাকা, ময়নাগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, শামুকতলা, রাজগঞ্জ ও জলপাইগুড়িতে রাস্তা অবরোধ করে ডিওয়াইএফ। প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধের জেরে সমস্যায় পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। ভ্যানরিকশায় চড়ে অবরোধ স্থল পার হয়ে অফিস যাত্রীদের বাস ধরতে হয়। কোথাও দূরপাল্লার বাস ঘুরপথে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেওয়া হলেও তিস্তা সেতু মেরামতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনও। কেননা, জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে সম্প্রতি তিস্তা সেতু মেরামতির জন্য যে সময় চাওয়া হয় বুধবারই তা শেষ হয়। |
যদিও বৃহস্পতিবারও সেতুর একদিকের মেরামতির কাজই শেষ হয়নি। উদ্বিগ্ন প্রশাসনের তরফে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ফের সোমবার পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। তার মধ্যে সেতুর আংশিক মেরামতির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে ফের আশ্বাস দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “তিস্তা সেতু নিয়ে উদ্বেগে রয়েছি। ৩ জানুয়ারির মধ্যে সেতুর একদিকের মেরামতির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।” ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চার লেনের সড়ক তৈরির জন্য শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, ফালাকাটা হয়ে যাওয়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কটি জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে যাওয়ার পরেই মেরামতি নিয়ে নানা সমস্যা চলছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও দীর্ঘদিন ধরে মেরামতির কাজ না-হওয়ায় রাস্তা ও সেতু বেহাল হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে যাত্রীদের সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তিস্তা সেতু পারাপার করতে গিয়ে। গত এক মাস ধরে বেহাল তিস্তা সেতুতে যানজটের জেরে নাকাল অবস্থা যাত্রীদের। সেতু মেরামতির দাবিতে যুব কংগ্রেস থেকে আরএসপি, ডিওয়াইএফ, সকলেই আন্দোলনে নেমেছে। আর আন্দোলনে নেমে সকলেই সড়ক অবরোধ শুরু করায় নিত্যযাত্রীদের যন্ত্রণা অসহনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীদের সমস্যার কথা বিবেচনা করে অবরোধ শুরুর ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে ডিওয়াইএফ কর্মীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। তবে তিস্তা সেতুর মেরামতি নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা চলতে থাকলে জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও করার হুমকি সিপিএমের ওই যুব সংগঠন। প্রয়োজনে বনধের পথেও যাওয়া হবে বলেও সংগঠনের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়। ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক অরিন্দম চক্রবর্তী বলেন, “সাধারণ যাত্রীদের অসুবিধের কথা ভেবেই দেড় ঘন্টা পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। প্রশাসনের তরফেও আশ্বাস মিলেছে। সোমবারের মধ্যে সদর্থক পদক্ষেপ না করা হলে জেলাশাসকের দফতর অবরোধ, বনধের পথে যাওয়া হবে।”সিপিএমের যুব সংগঠনের অভিযোগ, তিস্তার পাশাপাশি বেহাল হয়ে পড়েছে জলঢাকা সেতুও। এক দশক ধরে ওই সেতু মেরামতি হয়নি। তিন বছর ধরে সেতুর হাল অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। ধূপগুড়ি থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর এই সেতুর অধিকাংশ জায়গায় কংক্রিটের চাদর উঠে গিয়েছে। সেতুর উপরে পথবাতির ব্যবস্থা থাকলেও রাতে তা জ্বালানো হয় না বলে অভিযোগ। সংগঠনের জেলা নেতা জয়ন্ত মজুমদার বলেন, “জলঢাকা সেতু দ্রুত মেরামতি না হলে বড় ধরনের আন্দোলনে নামা হবে।” |