পরিবহণে আর ভর্তুকি জোগানো হবে না বলে বেশ কিছু দিন ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ইঙ্গিত মিলছিল। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়ে দিলেন, পরিবহণ নিগমগুলিকে আর ভর্তুকির টাকা দেওয়া যাবে না। বৃহস্পতিবার একই সঙ্গে তিনি জানান, যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন বাসরুট ঢেলে সাজতে হবে। কিছু রুটে সরকারি বাস কমে যাওয়ায় যাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে। সমস্ত দিক মাথায় রেখে এই ব্যাপারে পরিবহণ নিগমগুলিকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর আগে পরিবহণমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে পরিবহণ নিগমগুলির কর্তাদের জানিয়েছিলেন, অর্থ দফতর আর ভর্তুকির টাকা দিতে পারবে না। নিগমগুলির বেশ কিছু কর্মীর গত দু’মাসের বেতনের টাকাও আটকে দিয়েছে সরকার। এই নিয়ে বিভিন্ন নিগমে অশান্তি চলছে। এই পরিস্থিতিতেই মমতা এ দিন মহাকরণে এক বৈঠকে অন্য মন্ত্রীদের সামনে তিনটি পরিবহণ নিগমের কর্তাদের জানিয়ে দেন, ভর্তুকির কথা তাঁদের ভুলে যেতে হবে। নিগম চালানোর অর্থ সংগ্রহ করতে হবে তাঁদেরই।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল মূলত গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতির ব্যাপারে। সেখানেই পরিবহণে ভর্তুকি বন্ধের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (সিএসটিসি), ট্রাম সংস্থা (সিটিসি) এবং ভূতল পরিবহণ নিগমের কর্তাদের নির্দেশ দেন, সরকারি বাসে পরিষেবা উন্নত করার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। বৈঠকে ছিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ত ও পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সী, দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান। এ ছাড়া ছিলেন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের সচিব, ইঞ্জিনিয়ার এবং কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের অফিসারেরা।
পরিবহণে ভর্তুকি রদ ছাড়াও মমতা সেখানে নির্দেশ দিয়েছেন, সরকারের নির্দিষ্ট করে দেওয়া জায়গা ছাড়া সাগরমেলায় আর যত্রতত্র রান্না করা যাবে না। তাঁবুতেও নয়। ইদানীং একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সতর্ক হতে চাইছে সরকার। গঙ্গাসাগর মেলাকে আগুন থেকে বাঁচাতেই এই নির্দেশ। তবে এ ক্ষেত্রে পাকাপাকি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে কি না, সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রতবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, মেলায় আগুন লাগার ঘটনা এড়াতে এ বার তাঁবুতে রান্নাবান্না করতে না-দেওয়ার উপরেই জোর দেবে প্রশাসন।” তিনি জানান, রান্না করার জন্য মেলায় কয়েকটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দেবে সরকার। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সেই সব জায়গায় রান্না করে তা নিয়ে যেতে হবে তাঁবুতে। |