চোলাইয়ের ঠেকে বচসার জেরে হত ২ বারুইপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
চোলাই মদের ঠেকে বচসার জেরে দুই ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর থানা এলাকার সাউথ গড়িয়া পঞ্চায়েতের কুলবেড়িয়া গ্রামে। ঘটনার জেরে উত্তেজিত জনতা চোলাইয়ের ঠেক ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। গণপিটুনির জেরে দু’জন মহিলা-সহ তিন জন গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ভ্যানচালক তেগাছি গ্রামের বাসিন্দা সমীর সর্দার (৩২) গত শনিবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার পর থেকে তিনি নিখোঁজ। কুলবেড়িয়া গ্রামের বাপি নস্কর (৪০) নামে এক ব্যক্তির চোলাইয়ের ঠেকে সমীর নিয়মিত যেতেন।
সমীরের পরিজনেরা বারুইপুর থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন। |
|
ভাঙচুরের পরে বাপি নস্করের বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র |
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ওই বাপি নস্করের চোলাই মদের ঠেক থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক ব্যক্তির পুকুরে বস্তাবন্দি একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই দেহটিই সমীরের। তার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা ওই চোলাই মদের ঠেকে চড়াও হয়। ঠেকের মালিক বাপি ও তার শাগরেদ হেমন্ত সর্দারকে বেধড়ক মারধর শুরু হয়। মারের চোটে তারা স্বীকার করে, গত শনিবার রাতে পাওনা টাকা নিয়ে বচসার জেরে সমীরকে মারধর করা হয়েছিল। এই কথা জানার পর উত্তেজনা বাড়তে থাকে। দু’জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ঠেক লাগোয়া বাড়িতে ঢুকে বাপি ও হেমন্তের স্ত্রীদের মারধর করা হয়। সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভাঙচুর চলে। তার পর ওই ঠেক ও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর জখম অবস্থায় চার জনকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। বাপিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। বাকি তিন জনকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, সমীর নিয়মিত ওই ঠেকে মদ খেতেন। মদের দাম বাকি পড়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই ওই দিন রাতে বাপি ও হেমন্তের সঙ্গে তার বচসা হয়। আক্রোশের বশে সমীরকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে মারে বাপি ও হেমন্ত। তার পর বস্তায় মুড়ে ইট বেঁধে ওই পুকুরে ফেলে দেয় দেহটি। এ দিন সকালে প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ ওই চোলাই মদের ঠেকে চড়াও হয়। বারুইপুর (পূর্ব)-এর বিধায়ক নির্মল মণ্ডল বলেন, “যে কোনও মৃত্যুর ঘটনাই বেদনাদায়ক। তবে সাধারণ মানুষ আইন হতে তুলে নেওয়ায় বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।” জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানান, কী করে ওখানে চোলাইয়ের ঠেক চলছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |
|