|
|
|
|
রাজস্ব আদায়ে বাধা শাসক তৃণমূলেরই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটাশপুর |
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ভূমি-ভূমিরাজস্ব মন্ত্রী। আর পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-১ ব্লকে মুখ্যমন্ত্রীর দলেরই লোকজন ভূমি-রাজস্ব আদায়ের বিরোধিতায় পথে নামল! ব্লক অফিসের সামনে রাস্তা অবরোধ থেকে শুরু করে বিডিও অমিতেন্দু পাল ও ব্লক ভূমি-ভূমিরাজস্ব আধিকারিক পার্থ মোদকের দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল তারা। রাজ্য যখন অর্থ-সঙ্কটে ধুঁকছে, উন্নয়ন-প্রকল্পের টাকা জোগাড়ে হয়রান সরকারতখন শাসকদলের লোকজনের এ হেন রাজস্ব-বিরোধিতায় বিস্মিত প্রশাসনের একাংশ থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির।
চাষের পর জমি থেকে মাটি বিক্রির জন্য সরকারকে রাজস্ব দেওয়ার বিরেধিতা করেই পটাশপুর-১ ব্লকের অমর্ষি গ্রামের বাসিন্দারা তৃণমূলের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্লক অফিসের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দিলে তাঁরা বিডিও ও ব্লক ভূমি-ভূমিরাজস্ব আধিকারিকের দফতর ঘেরাও করেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতির্ময় করের উপস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন এগরার মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠ থেকে ফসল তুলে নেওয়ার পরে ব্লক এলাকার জমি থেকে মাটি তুলে বিক্রি করছিলেন চাষিরা। বাস্তুজমি ভরাট করতে এবং বন্যাপ্রবণ এলাকার চাষজমি উচু করার জন্য এই মাটি বিক্রি করা হচ্ছিল। ব্লক ভূমি-ভূমিরাজস্ব আধিকারিক পার্থ মোদকের বক্তব্য, এক জায়গার জমি থেকে মাটি তুলে অন্যত্র ব্যবহার বা বিক্রি করা হলে মাটি বিক্রেতার কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে ভূমি দফতর। নিয়ম অনুযায়ী, ১০০ ঘনফুট মাটির জন্য ৪৯ টাকা কর দিতে হয়। তা না দিলে, ওই পরিমাণ মাটির জন্য ৭৬ টাকা জরিমানা দিতে হয়। পার্থবাবুর অভিযোগ, “এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের মদতে এলাকায় যথেচ্ছ ভাবে মাটি কাটা ও বিক্রির কাজ চলছে।” বেআইনি ভাবে মাটি কাটা ও বিক্রি বন্ধে ও সরকারি রাজস্ব আদায়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে পার্থবাবু দফতরের কয়েক জন কর্মী ও পুলিশ নিয়ে নানা এলাকায় অভিযান চালান। আটকানো হয় মাটিবোঝাই বেশ কয়েকটি গাড়ি। এর পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ-অবরোধ। ব্লক তৃণমূল নেতা আশিস সিংহের বক্তব্য, “চাষিরা তো ব্যবসার জন্য এই মাটি বিক্রি করছেন না। কোথাও নিজেদেরই নিচু জমি উঁচু করতে বা অন্যত্র বাস্তুজমি ভরাট করার জন্য মাটি তোলা হচ্ছিল। এর আগে তো কোনও দিন ভূমি দফতর থেকে এ জন্য রাজস্ব আদায় করা হয়নি। আশপাশের ব্লকেও হয় না। এমন কোনও নিয়ম যে আছে এলাকার মানুষ তা-ই জানতেন না! তাই তৃণমূলের পক্ষ থেকে চাষিদের থেকে কর বা জরিমানা না নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।” পাশাপাশি গ্রামবাসীদের ভূমি ও ভূমিরাজস্ব দফতরের নিয়মাবলি সম্পর্কে সচেতন করারও দাবি জানানো হয়। মহকুমাশাসক রত্নেশ্বরবাবু বলেন, “আইন অনুযায়ী সরকার যাতে রাজস্ব পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আগামী ১০ জানুয়ারি ব্লকে সভা করে পঞ্চায়েত প্রধান, রাজনৈতিক দল এবং গ্রামবাসীদের নিয়ম জানানো হবে।” |
|
|
|
|
|