প্রতিবন্ধকতা অনেক। নবদ্বীপের এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের সঙ্গীতা, সান্ত্বনা, পিঙ্কি, রীতা-সকলেই দৃষ্টিহীন। তাতে কী, সব বাধা পেরিয়ে বাইশটি রাজ্যের সাড়ে তিনশো প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে জাতীয় প্যারা-অলিম্পিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় দলগত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওরা। পিছিয়ে নেই স্কুলের ছাত্ররাও। রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় তারাও খেতাব জিতেছে সাঁতারে।
জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার পাশাপাশি, রাজ্য স্তরের সাঁতার প্রতিযোগিতাতেও খেতাব জিতেছে ওই স্কুলের ৭ ছাত্রী। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ওই প্যারা অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় রাজ্যের ২৩৭ জন প্রতিবন্ধী প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ৩টি সোনা, ৪টি রূপো এবং ৫টি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। বালিকা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেয়েদের সাত জনের ওই দলটি। |
খেতাব জেতার পরে। —নিজস্ব চিত্র। |
রাজ্যস্তরের পরবর্তী পর্যায়ে ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছে এই স্কুলের দশ পড়ুয়া। ডিসেম্বরের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় ১২টি রাজ্যের মধ্যে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছে ওই দশ জনই। ৬৬২ পয়েন্টে জয়ী হয়ে মাস্টার ক্ষেমচাঁদ দাভাস স্মৃতি পুরস্কার জিতেছে পশ্চিমবঙ্গ। ব্লাইন্ড স্কুলের ওই পড়ুয়ারা ১৫টি পদক জিতেছে।
রাজ্যস্তরের পাশাপাশি জাতীয়স্তরে পদক জয় করে ওদের স্বপ্ন খানিকটা সফল হয়েছে। তবে এখনও সরকারের তরফে কিংবা সামাজিক ভাবে কোনও স্বীকৃতি মেলেনি। স্কুলের তারক ঘোষ, শুভ সিংহ, আদুরি খাতুন, মাম্পি খাতুন, পাপিয়া খাতুনেরা বলল, “ন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে গিয়ে অন্য রাজ্যের ছেলে মেয়েদের কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছি। হরিয়ানার ছেলে মেয়েরা জানায় ওরা প্রতিটি সোনা, রূপো, ব্রঞ্জের পদক জেতার পরে সরকারি ভাবেও ওদের আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।”
বেঙ্গল প্যারা অলিম্পিক সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বাসুদেব চট্টোপাধ্যায় বললেন, “আমাদের কেউ কোনও সাহায্য করে না। আমরা রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রতিবন্ধী সাঁতারুদের জন্য অন্তত একটা সুইমিং পুল তৈরি করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাব।” |