চুঁচুড়া থানার দুই পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড
সত্যব্রতর দৃষ্টি ফেরার নিশ্চয়তা দিলেন না ভিনরাজ্যের চিকিৎসক
ন্নত চিকিৎসার জন্য ভিন্ রাজ্যে গিয়েও চোখের দৃষ্টি ফেরার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারলেন না হুগলির ব্যান্ডেলে প্রহৃত ওএনজিসি কর্তা সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়।
সত্যব্রতবাবুর কর্মস্থল আগরতলা। তাঁর স্ত্রী-মেয়ে ব্যান্ডেলের বাড়িতে থাকেন। ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন সত্যব্রতবাবু। গত ২৪ ডিসেম্বর এক বন্ধুর বাড়ি থেকে নিমন্ত্রণ সেরে ফেরার পথে কয়েকজন মদ্যপ যুবকের হাতে প্রহৃত হন। পুলিশ প্রথমে ঘটনার তদন্ত করতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ। কর্তব্যে গাফিলতির জন্য ওই থানার এক এসআই এবং এক এএসআই-কে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ঘটনার রাতে ব্যান্ডেলের বলাগড় রোডের বাড়িতে গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন সত্যব্রতবাবু। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী-মেয়ে। অভিযোগ, ব্যান্ডেল চার্চ পেরিয়ে বলাগড় রোডে ঢোকার মুখেই কয়েকজন যুবক মদ্যপ অবস্থায় তাঁদের পথ আগলে দাঁড়ায়। প্রতিবাদ করায় সত্যব্রতবাবুকে গালিগালাজ করা হয়। এর পরে ওই যুবকদের শাসানিতে ভয়ে টুঁ-শব্দ করেননি মুখোপাধ্যায় পরিবার। ওই যুবকেরা সত্যব্রতবাবুর স্ত্রী-মেয়েকে উত্যক্ত করে বলেও অভিযোগ।
ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। বাড়িতে ঢোকার মুখে পঞ্চাশোর্ধ সত্যব্রতবাবুকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারের চোটে তাঁর বাঁ চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল এবং সেখান থেকে শেওড়াফুলির একটি চক্ষু হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে কয়েকদিন তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে তাঁর চোখে অস্ত্রোপচার হয়। সব জায়গা থেকে থেকেই বলে দেওয়া হয়, বাঁ চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। গত ২ জানুয়ারি তিনি হায়দরাবাদে যান উন্নত চিকিৎসার জন্য। সত্যব্রতবাবুর স্ত্রী বিদিশাদেবী বৃহস্পতিবার জানান, হায়দরাবাদেও সত্যব্রতবাবুর চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। সেখানকার চক্ষু-বিশেষজ্ঞেরাও তাঁর বাঁ চোখের দৃষ্টি ফেরার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি।
ঘটনার পরে বিদিশাদেবীরা চুঁচুড়া থানায় গিয়েছিলেন এফআইআর করতে। অভিযোগ, ডিউটি অফিসার প্রথমে এফআইআর নেননি। জেনারেল ডায়েরি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে হইচই হওয়ার পর ২৬ ডিসেম্বর এফআইআর নেওয়া হয়। জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা চুঁচুড়া থানার গাফিলতি নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেন। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার রাতে থানার ডিউটি অফিসার ছিলেন এএসআই জগন্নাথ চৌধুরী। তিনি এবং এসআই তাপস ঘোষ বিষয়টিতে আদৌ গুরুত্ব দেননি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অশেষ বিশ্বাস বলেন, “ওই দুই অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তে দেখা গিয়েছে ওঁদের কর্তব্যে কিছু খামতি ছিল।” বিষয়টি জানা সত্বেও গুরুত্ব না দেওয়ায় আইসি সমর ভট্টাচার্যকে ‘ভর্ৎসনা’ করা হয় বলেও জানিয়েছেন জেলা পুলিশের শীর্ষকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি হতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ২৮ তারিখ রাতে পাঁচ যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরের দিন চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক সকলকেই ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রের খবর, সত্যব্রতবাবু এবং বিদিশাদেবীর সামনে টিআই প্যারেডে হাজির করানো হবে ওই যুবকদের। আজ, শুক্রবার হায়দরাবাদ থেকে সত্যব্রতবাবুর বাড়িতে পৌঁছনোর কথা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.