নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মেমোগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে ইসলামাবাদ উত্তাল। ঠিক সেই সময় নয়াদিল্লি জানিয়ে দিল, পাকিস্তানে যে সরকারই আসুক, ভারতের পাক-নীতিতে বদল ঘটবে না। অর্থাৎ, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার থাক অথবা সামরিক অভ্যুত্থানই ঘটুক, সে দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী সাউথ ব্লক। বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাইয়ের কথায়, “বন্ধু বাছার স্বাধীনতা আমাদের রয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র বেছে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।”
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ধারাবাহিক চেষ্টায় পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা সম্ভব হয়েছে। মুম্বই সন্ত্রাসের পর সংঘাতের শীর্ষে পৌঁছে যাওয়া সম্পর্ক আবার কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কেন্দ্র চায়, ভারত এবং সার্বিক দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির স্বার্থে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়া চলুক। নিরাপত্তা থেকে বাণিজ্য বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে ইতিবাচক ভাবে কথা এগোচ্ছে বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। আবার এটাও ঠিক যে, সে দেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতাও শুরু হয়েছে। মেমোগেটের ঘটনা এই অস্থিরতা আরও জটিল করে তুলেছে। সম্প্রতি একটি স্মারকলিপি (মেমো) প্রকাশিত হওয়ায় বিপাকে পড়ছে পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকার। সেনা-অভ্যুত্থান রুখতে সরকার তাতে মার্কিন সাহায্য চেয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনার তদন্তের জন্য পাক সুপ্রিম কোর্ট একটি বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করেছে। খোদ প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিকে নোটিস দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি তথ্য ও প্রমাণ নিয়ে কমিশনের সামনে হাজির হন।
সব মিলিয়ে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে। কেন্দ্র জানে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রে অস্থিরতা তৈরি হলে তার
রেশ সীমান্ত পেরিয়ে আসতে সময় লাগে না। গোটা ঘটনার দিকে তাই নজর রাখছে নয়াদিল্লি। চলছে পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণও। কিন্তু মনমোহন সরকার প্রকাশ্যে এমন কোনও পদক্ষেপ নিতে চাইছে না, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ওই অস্থিরতার ছাপ পড়ে।
আজ রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে রঞ্জন মাথাই বলেন, “পাকিস্তানে যে সরকারই থাকবে, তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। দু’দেশের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থেই তা করা প্রয়োজন। দু’দেশই পরমাণু শক্তিধর। ফলে সতর্ক হয়ে পদক্ষেপ করাটা জরুরি।” পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “অবশ্যই গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আমরা বেশি স্বচ্ছন্দ, কিন্তু পাকিস্তানে যে ধরনের সরকারই আসুক না কেন, একই ভাবে কাজ করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।” |