চাপের মুখে সঙ্ঘ, কুশওয়াহা-বিতর্কে ক্ষোভ বিজেপিতেই
মায়াবতীর দল থেকে বিতাড়িত, বিতর্কিত নেতাকে বিজেপিতে আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন অনেকটাই এক ঘরে দলের সভাপতি নিতিন গডকড়ী। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, বিজেপি সভাপতি হতে গিয়ে যে সঙ্ঘের অনুগ্রহ পেয়েছিলেন তিনি, তারাই সাম্প্রতিক বিতর্কে পাশে দাঁড়াতে ইতস্তত করছে।
দুর্নীতিতে অভিযুক্ত একদা মায়াবতী ঘনিষ্ঠ বাবুসিংহ কুশওয়াহাকে দলে আনার বিরোধিতা করায় গত কালই উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে যাতে আর কেউ মুখ না খোলেন, সেই বার্তাই দিতে চেয়েছিলেন গডকড়ী। তার পরেও আজ উত্তরপ্রদেশে দলের সাংসদ যোগী আদিত্যনাথ, লালকৃষ্ণ আডবাণী-সুষমা স্বরাজ ঘনিষ্ঠ সাংসদ কীর্তি আজাদ থেকে শুরু করে বিজেপির শরিক দলের নেতা নীতীশ কুমার পর্যন্ত কুশওয়াহাকে দলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন। আদিত্যনাথ তো এমন কথাও বলেছেন, “দুর্নীতির দায়ে মায়াবতীর দল থেকে বিতাড়িত নেতাকে দলে আনায় মানুষ বিজেপিকে ভোটে শিক্ষা দেবেন।” ভোটের আগে এমন ঘটনায় উজ্জীবিত কংগ্রেস স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়েনি। সব মিলিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও আজ সকালে রাজ্যসভায় লোকপাল বিতর্কে নালিশ জানাতে রাষ্ট্রপতির কাছে দেখা করার পরে কুশওয়াহা-বিতর্কে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে যান আডবাণী-সুষমা-জেটলিরা।
কুশওয়াহা-বিতর্কে গডকড়ীর সিদ্ধান্তকে খোলাখুলি সমর্থন করতে পারছে না আরএসএস-ও। সঙ্ঘ সূত্রের মতে, অত্যন্ত অনগ্রসর শ্রেণির এই নেতাকে দলে এনে উত্তরপ্রদেশে ভোটযুদ্ধে বিজেপি কতটা লাভবান হবে, সেটা পুরোটাই অনুমানের বিষয়। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশজুড়ে ও জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি যে ভাবে দুর্নীতি-বিরোধী অভিযানের মুখ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, নিঃসন্দেহে তা বড় ধাক্কা খেল। সঙ্ঘের মুখপত্র ‘পাঞ্চজন্য’তে গত সপ্তাহেও বড় করে আবেদন করা হয়েছিল, উত্তরপ্রদেশে দল বদলানো এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের ভোট না দিতে। কংগ্রেসকে বেকায়দায় ফেলতে হিন্দু সম্মেলনে দিগ্বিজয় সিংহের সঙ্গে সঙ্ঘ নেতাদের ছবিও ছাপানো হয়েছে ‘পাঞ্চজন্য’য়। কিন্তু কুশওয়াহা-বিতর্কের পরে সঙ্ঘ শিবিরও এখন মনে করছে, দুর্নীতি প্রশ্নে জাতীয় রাজনীতি ও অন্যান্য রাজ্যের ভোটে এর প্রভাব পড়বে।
কুশওয়াহা-বিতর্কে মুখ না খুললেও সঙ্ঘের মুখপাত্র রাম মাধব আজ বলেন, “বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাই না। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।” সঙ্ঘের এক নেতার কথায়, “রামদেবের আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। মুম্বইয়ে ধাক্কা খাওয়ার পর অণ্ণা সরাসরি কংগ্রেস বিরোধিতায় নামছেন না। ফলে কংগ্রেস-বিরোধিতার যে জায়গা বিজেপি তৈরি করেছিল, এই এক সিদ্ধান্ত তাতেও আঘাত করল।” গডকড়ী দল এবং সঙ্ঘকে ভোটযুদ্ধের বাধ্যবাধকতার কথা বোঝানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর যুক্তি, উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল না হলে পরের লোকসভা জেতার স্বপ্ন ছাড়তে হবে।
এই কৌশলের অঙ্গ হিসেবেই আজ রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে উত্তরপ্রদেশে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি অধ্যুষিত বুন্দেলখণ্ড এলাকায় প্রচারে চলে যান গডকড়ী। উমা ভারতী এবং রাজনাথ সিংহকেও সঙ্গে নেন তিনি। কুশওয়াহাকে দলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে জনমত গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন জেটলি-সহ একাধিক নেতাকে। যে বিজেপি নেতা কিরিট সোমাইয়া সাম্প্রতিক অতীতে মায়াবতী-সহ কুশওয়াহার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন, আজ তিনি এক বিবৃতিতে মায়াবতীর অন্য মন্ত্রী-নেতাদের রেহাই দিয়ে শুধু উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের আর এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার কুশওয়াহা-বিতর্কে মুখ খুলে বলেছেন, “ওঁকে যখন দলে নেওয়া হয়, তখন কোনও মামলা ছিল না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.