নতুন বোর্ড তৈরির পরে প্রথম বৈঠকেই তথ্যপ্রযুক্তি-কর্তাদের তোপের মুখে পড়লেন নবদিগন্ত-কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার পাঁচ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তাঁরা। মূলত শিল্প সংস্থাগুলিকে বকেয়া সম্পত্তিকর মিটিয়ে দিতে অনুরোধ করাই ছিল বৈঠকের উদ্দেশ্য। কিন্তু করের প্রসঙ্গ উঠতেই নবদিগন্তের পরিষেবা নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ তোলেন শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নবদিগন্তের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সংস্থার দুই আধিকারিককে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনাও করেন।
এ দিনের আলোচনায় বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার প্রায় ১৩৫ জন প্রতিনিধি ছিলেন। সভার শুরুতে আলাপনবাবু বলেন, ‘‘পাঁচ নম্বর সেক্টরে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। তার জন্য নবদিগন্ত টাকা দেবে। কিন্তু সেই টাকা দিতে গিয়ে যেন নবদিগন্তের বোঝা না বাড়ে। এমন অনেক সংস্থাই রয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে যাঁদের সম্পত্তিকর বকেয়া রয়েছে। আমাদের অনুরোধ, আপনারা বকেয়া কর মিটিয়ে দিন।”
এর পরেই বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা শিল্পতালুকের বিভিন্ন অব্যবস্থা নিয়ে নবদিগন্ত-কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে শুরু করেন। আইবিএম, টিসিএস, গ্লোবসিন-সহ একাধিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় গর্ত হয়ে রয়েছে। সারাই হয় না। এর জেরে অফিসের সময়ে নিত্যদিন যানজট হচ্ছে। গাড়ি চলতে গিয়ে ঝাঁকুনি খাচ্ছে। রাস্তার ধারে জঞ্জাল পড়ে থাকছে। হকারেরা দখল করে নিচ্ছেন রাস্তার দু’ধার। রাস্তার উপরে গ্যাস বা উনুন জ্বেলে রান্নাও হচ্ছে। ফলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারবে না বলে তাঁদের আশঙ্কা।
পাঁচ নম্বর সেক্টরে দীর্ঘদিন রাস্তার গর্ত মেরামত হয়নি জেনে অপ্রস্তুত হয়ে যান আলাপনবাবু। নবদিগন্তের সিইও বদ্রীনারায়ণ কর এবং টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসার দেবদাস ভট্টাচার্যকে প্রকাশ্যেই ভর্ৎসনা করেন আলাপনবাবু। তিনি বলেন, “এটা ঠিক নয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে লজ্জিত। রাস্তার গর্ত সারাই করার মতো টাকা নবদিগন্তের রয়েছে। তা সত্ত্বেও এত দিন তা চোখে না পড়াটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন।” এর পাশাপাশি, হকারের বিষয়টি মানবিকতার সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান আলাপনবাবু এবং ভাইস চেয়ারম্যান তথা বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু।
অন্য দিকে, পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে এ দিন নবদিগন্তের উদ্যোগে পাঁচ নম্বর সেক্টরে এক বেসরকারি হাসপাতালে গাড়িচালকদের চোখ পরীক্ষার ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। সেখানে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি (ট্রাফিক) গৌতমমোহন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “শিল্পতালুকের পথ-নিরাপত্তার প্রয়োজনে সেখানে নতুন ট্রাফিক গার্ড, ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হবে। পাশাপাশি, পাঁচ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালগুলিতে বসানো হবে ক্লোজ্ড সার্কিট ক্যামেরা।”
|