আমজনতার হাতে থলি উপচে পড়া শীতের সব্জি যে ইঙ্গিত দিচ্ছিল, এ বার তাতে শিলমোহর দিল সরকারি পরিসংখ্যান। এত দিন কমছিল খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার হার। এ বার কমলো দামই। ২৪ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে তাই এক ধাক্কায় খাদ্য সামগ্রীর মূল্যহ্রাস ঘটল ৩.৩৬%।
গত ছ’বছরে এত নীচে নামেনি খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। বস্তুত, দাম কমার অর্থ মূল্যবৃদ্ধির হার শূন্যের নীচে নেমে যাওয়া। যা দাঁড়িয়েছে (-)৩.৩৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহের মূল্যবৃদ্ধি ০.৪২%। ২০১০-এর একই সময়ে তা ছিল অত্যন্ত চড়া, ২১%। এর জেরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ বার তার ২৪ জানুয়ারির ঋণনীতিতে সুদ কমানোর পথেই ফিরবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। |
১৩ বার সুদ বাড়ানোর পরে ডিসেম্বরের ঋণনীতিতেই সে পথ থেকে সরে এসে তা অপরিবর্তিত রেখেছিল আরবিআই। শীর্ষ ব্যাঙ্ক এ বার বিপরীত পথে হাঁটুক, দাবি শিল্পমহলেরও। একই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সি রঙ্গরাজন। পাশাপাশি তিনি বলেন, “মনে হয় সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হারও মার্চের মধ্যে নেমে আসবে ৭ শতাংশের নীচে।” অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ও বলেছেন, “সাম্প্রতিক কালে মূল্যবৃদ্ধি শূন্যের নীচে নামার নজির এই প্রথম।” তবে ডলারে টাকার দাম পড়া এখনও ভারতের পক্ষে উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে মূল্যবৃদ্ধি কমলেও তা প্রভাব ফেলেনি শেয়ার বাজারে। মুনাফা ঘরে তোলার জেরে সেনসেক্স পড়েছে ২৬ পয়েন্ট।
আলোচ্য সপ্তাহে শাক-সব্জির দাম কমেছে ৫০%। পেঁয়াজ প্রায় ৭৪%, আলু ৩৪%, গম ৩.৪%। কিন্তু ডালের দাম বেড়েছে প্রায় ১৪%, দুধ ৯.৫%, ডিম, মাছ, মাংস প্রায় ১৪%। তবে মূল্যবৃদ্ধি এতটা নেমে আসার পিছনে এক দিকে যেমন রয়েছে খরিফ শস্যের ভাল ফলন, অন্য দিকে তেমন কাজ করেছে গত বছরের চড়া হার (২১%)। তার ভিত্তিতে এ বারের হার হিসাব করার জন্যই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এতটা নীচে নেমেছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ অনুভূতি সহায় ইঙ্গিত দেন, জানুয়ারিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নগদ জমার অনুপাত কমাবে। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের আগে রেপো রেট কমবে না। আর্থিক সংস্থা ডেলয়েট, হাসকিন-এর ডিরেক্টর অনীশ চক্রবর্তী বলেছেন, কিছু দিন খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কমই থাকবে। |