নিজস্ব সংবাদদাতা • নলহাটি |
পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার নেওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। নলহাটি পাথর শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক-মালিক সংঘাত দ্রুত মেটাতে রামপুরহাটের মহকুমাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। তিনি এ দিন বলেন, “উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা চালানো হবে।
প্রসঙ্গত, শিল্পাঞ্চলের যে ১২০টি ক্রাশারের পাথর বোঝাই করা নিয়ে শ্রমিক-মালিক বিবাদের সূত্রপাত, সেগুলিতে বুধবার থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিক সংগঠন। এর ফলে ওই ক্রাশারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অন্য দিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নলহাটি ১ ব্লক অফিস এই সমস্যা মেটাতে বিডিও-র ডাকা বৈঠকে কয়েক জন মালিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল শ্রমিকদের বিরুদ্ধে।
এ দিন শ্রমিক সংগঠনের দুই নেতাই দাবি করেন, “মালিকপক্ষই দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের কাজ না দিয়ে তাঁদের রোজগার থেকে বঞ্চিত করছে। আবার নিজেদের তিনটি সংগঠনের মধ্যেকার বিবাদ ধামাচাপা দিতে এবং মঙ্গলবার নিজেদের মধ্যেই মারামারি করে সেই দোষও শ্রমিকদের উপরে দিচ্ছে।” দুই শ্রমিক সংগঠনের হুঁশিয়ারি, যদি চুক্তি অনুযায়ী ওই ১২০টি ক্রাশারে ৭২০ জন শ্রমিককে কাজ না দেওয়া হয় এবং যদি ওই ক্রাশারগুলি অনির্দিষ্টকাল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয়, তা হলে শ্রমিক সংগঠনও ভবিষ্যতে চুপ করে বসে থাকবে না।
মালিকপক্ষের পাল্টা অভিযোগ, ১২০টি বাদ দিয়ে অন্য যে-সব ক্রাশার চালু আছে, সেখানে এ দিন গাড়ি ঢুকতে বাধা দিয়েছেন ওই দুই শ্রমিক সংগঠনের সদস্যেরা। নলহাটির কোঠাতলা মোড়ে এই বাধা দেওয়ার ফলে এ দিন পাথর শিল্পাঞ্চলে পাথর বোঝাই করার জন্য কোনও গাড়ি ঢুকতে পারেনি। মালিকপক্ষের তরফে পিন্টু সিংহ বলেন, “প্রশাসনিক বৈঠকে আমাদের কয়েক জনকে মারধর করা হয়েছিল। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেই ওই ১২০টি ক্রাশার বন্ধ রেখেছেন মালিকেরা।” তবে মালিক সমিতির এক নেতা আনন্দ যাদব বলেন, “আমরা অনেকেই ক্রাশার বন্ধ রাখার পক্ষপাতি নই। ক্রাশারগুলি চালু রেখে শ্রমিক সংগঠনের দাবি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। তাতে সমাধান সূত্র মিলতে পারে বলে আশা করছি।” |