নিজস্ব সংবাদদাতা • বোলপুর |
বোলপুরের কাঁকুটিয়া একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ে তদন্তে পুলিশ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী |
ওই ঠিকাদার সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার বৈদ্যনাথ কুম্ভকারের অভিযোগ, এ দিন ৩০-৪০ জন স্থানীয় বাসিন্দা ওই বাড়ির একাংশ ভেঙে দেন। ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের মারধরও করা হয়। তাঁর দাবি, “এক ট্রাক খারাপ ইট এসেছিল। কিন্তু জানার পরেই তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করার অভিযোগ ঠিক নয়।” বৈদ্যনাথবাবুর আরও অভিযোগ, “আসলে এলাকার কিছু লোক নির্মাণকাজের জন্য বিভিন্ন মালমশলা সরবরাহের বরাত পেতে চেয়েছিলেন। আমরা নিয়ম মেনে তাঁদের আবেদন করতে বলি। তা না করে ওঁরা গায়ের জোরে বরাত পেতে চান। আমরা তাতে রাজি না হওয়াতেই এখন নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”
এই অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে স্থানীয় রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য লেটে সোরেনের দাবি, “উপকরণ সরবরাহের বরাত চাওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। আসলে ওই স্কুল গড়তে আদিবাসীরা ৩৫ বিঘা জমি দান করেছেন। তাঁরা চান, সরকারি শিডিউল মাফিক কাজ হোক। কিন্তু ঠিকাদারি সংস্থা বেনিফিশিয়ারি কমিটিকে কোনও রকম পাত্তা না দিয়ে এক নম্বর ইটের পরিবর্তে ৩ নম্বর ইট-সহ বিভিন্ন নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কাজ বন্ধ রেখে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি করেছি। নির্মাণকাজ ভেঙে দেওয়া, কর্মীদের মারধোরের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গণ্ডগোলের আশঙ্কায় ওই ঠিকাদারি সংস্থাকে আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।”
অবিলম্বে স্কুল চালুর দাবিতে এ দিনই স্কুলের গেটে বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসী গাঁওতা। সংগঠনের অন্যতম সদস্য কঙ্কা সোরেনের অভিযোগ, “সিপিএম আশ্রিত কিছু লোকজন ওই নির্মাণকাজ মালমশলা সরবরাহ করত। পরে তাদের সরিয়ে দেয় ঠিকাদার সংস্থা। তারাই এ দিন ঝামেলা করেছে। আমরা চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুল চালু হোক। নির্মাণকাজে অসঙ্গতি থাকলে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।”
বোলপুরের মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি বলেন,“ কয়েক বার ওই নির্মাণকাজ পরিদর্শনে গিয়েছি। প্রাথমিক ভাবে দেখে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার হচ্ছে বলে মনে হয়নি। তবু যখন অভিযোগ উঠেছে, তখন তদন্ত করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ চালু করব।” একই সঙ্গে মহকুমাশাসকের মন্তব্য, “গ্রামবাসীরা ঠিক কাজ করেননি। কোন অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারতেন। প্রশাসন তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিত। এ ভাবে নিজেদের হাতে আইন তুলে নেওয়া কোনও অবস্থাতেই উচিত নয়।” |