ক্ষতিপূরণের টাকা না মেলেনি, এই অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় বর্ধমানের পুলিশ সুপারকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিল কাটোয়া মহকুমা আদালত। আগামী সোমবার ওই আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ ও দায়রা বিচারকের এজলাসে তাঁকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার এই নির্দেশ দেন বিচারক অতনু রায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ১৭ মে কাটোয়া আখড়া স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশের গাড়িতে মৃত্যু হয় রাজেশ্বরী ঘোষ নামে এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর। কাটোয়া থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন মৃত ছাত্রীর বাবা সুভাষ ঘোষ। ২০০৩ সালে অতিরিক্ত জেলা জজ ও দায়রা বিচারক জেলা পুলিশ সুপারকে মৃতার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই টাকার দাবিতে তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার বি এন রমেশকে চিঠিও দেয় মৃতার পরিবার। কিন্তু ক্ষতিপূরণ হাতে না পাওয়ার অভিযোগে ২০০৯ সালে আদালতের দ্বারস্থ হন সুভাষবাবু।
সুভাষবাবুর আইনজীবী সৌমেন সরকার বলেন, “বর্তমানে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা।” তিনি জানান, পুলিশ সুপারের দফতর এ ব্যাপারে আদালতের সমন নিচ্ছিল না। বারবার এমন ঘটায় বিচারক ক্ষুব্ধ হন। গত ২ জানুয়ারি পুলিশ সুপারকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ সুপারের বদলে আদালতে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) দেবাশিস সরকার। তিনি আদালতকে জানান, ব্যস্ত থাকায় পুলিশ সুপার আসতে পারেননি। বদলে তাঁকে পাঠিয়েছেন। মামলার সিনিয়র আইনজীবী শৈলকুমার মিত্র বলেন, “এ কথা শোনার পরেই বিচারক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ভর্ৎসনা করেন। আগামী ৯ জানুয়ারি পুলিশ সুপারকে আদালতে হাজির থেকে পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন বিচারক।”
কাটোয়া মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা না মেলায় পুলিশ তা দিতে পারেনি।” পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই ক্ষতিপূরণের অর্থ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পান, তার জন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। ওই ঘটনার সময়ে আমি দায়িত্বে ছিলাম না। দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছি।” |