তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠীর গোলমালের জেরে ছাত্র সংসদ গঠন বানচাল হয়ে গেল বর্ধমানের রাজ কলেজে। বুধবার সন্ধ্যায় ওই সভা ভেস্তে যাওয়ার পিছনে অবশ্য অধ্যক্ষকে দায়ী করেছে টিএমসিপি-র এক পক্ষ। অধ্যক্ষের আবার দাবি, পুলিশ-প্রশাসন উপযুক্ত ভূমিকা না নেওয়ার জন্যই গণ্ডগোল হয়েছে। এর জেরে আপাতত ছাত্র সংসদ অফিস ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিছু দিন ধরেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অশান্তির পরিস্থিতি রয়েছে রাজ কলেজে। ২৪ বছর পরে কলেজের ভোটে জিতেছিল টিএমসিপি। কলেজ সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে নবনির্বাচিত ৬৮ জনের মধ্যে ৬১ জন প্রতিনিধি কলেজে আসেন। কিন্তু ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক বা অন্য পদ নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলমাল শুরু হয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। তাদের এক পক্ষ, কলেজের তৃণমূল ছাত্র নেতা সন্তোষ সিংহ ও প্রাণগোপাল পালেদের দাবি, “অধ্যক্ষ এমন ভাবে এই পদাধিকারী নির্বাচনের নোটিস দেন, যা অনেকের নজরেই পড়েনি। ৩টের সময় নির্বাচন শুরুর কথা থাকলেও খোদ অধ্যক্ষ আসেন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ। অনেক প্রতিনিধি তাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই এই নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানানো হয়েছিল।”
তবে টিএমসিপি-র অন্য দুই নেতা সুবায়ু সাহা, পিঙ্কু ক্ষেত্রপালেদের দাবি, “অধ্যক্ষের নোটিস দেখেই ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে ৬১ জন আসেন। শান্তির পরিবেশেই ভোট হতো। সাধারণ সম্পাদক পদে আমাদের পক্ষের প্রার্থীর দিকেই বেশি সমর্থন রয়েছে বুঝতে পেরেই ওরা গোলমাল শুরু করে। অধ্যক্ষ ভোট শুরু করিয়েও শেষে এই গোলমালের জেরে ভোট স্থগিত করে দিতে বাধ্য হন।” অধ্যক্ষ সুভাষচন্দ্র নন্দী বলেন, “এমন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় যে, নির্বাচন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই।” তাঁর অভিযোগ, “প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকলেও তাঁরা এই বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কোনও ব্যবস্থা নিতে চাননি। কীসের ভরসায় ভোট করব?” মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) প্রশান্ত অধিকারী বলেন, “বিকেল ৩টের সময়ে যে ভোট নেওয়ার কথা ছিল, তা সন্ধ্যে ৬টার পরে শুরু করা হয়। এ জন্য ভোটের ব্যাপারে ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যেই আপত্তি ওঠে। তখন জোর করে ভোট করাতে গেলে বড় গোলমালের আশঙ্কা ছিল। ভোট স্থগিতের সিদ্ধান্তও অধ্যক্ষই নিয়েছেন।” |