মিশ্র প্রভাব বামেদের কৃষি-বন্ধে
বামেদের ডাকা কৃষি ধর্মঘটের জেরে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার গ্রামাঞ্চলের জনজীবন বুধবার কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে যায়। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট, চাঁচল, হলদিবাড়ি, কোচবিহার সদর লাগোয়া অনেক গ্রামেই চাষবাস বন্ধ রেখে চাষিদের মিছিল করতে দেখা যায়। উত্তর দিনাজপুর ও শিলিগুড়িতে আলু-পাট রাস্তায় ফেলে কিছুক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। কৃষি ধর্মঘটের জেরে রাঙাপানি, খড়িবাড়ি বাজার, চেকরমারি, ভালুগাড়া এলাকায় কৃষিজাত পণ্যের হাট বসেনি। ফাঁসিদেওয়া, বিধাননগর, নকশালবাড়ি কিংবা বাগডোগরায় গ্রামের সবজি চাষিদের আনাগোনা ছিল না বললেই চলে। এদিন সকালে কৃষক সভার ডাকে হাতিঘিষা একটি সভা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন কৃষক সভার রাজ্য সহ সম্পাদক অনিল সাহা-সহ অন্যান্যরা। পরে সেখানে প্রায় ত্রিশ মিনিট প্রতীকী জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। ফাঁসিদেওয়া ও খড়িবাড়িতেও প্রতিবাদ মিছিল হয়। কৃষক সভার রাজ্য সহ সম্পাদক বলেন, “যেভাবে ধান, পাট কিংবা আলু বিক্রি করতে গিয়ে কৃষকদের নাকাল হতে হয়েছে তাতে কৃষি ধর্মঘটে এই স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া স্বাভাবিক ছিল। কৃষি পণ্যের লাভজনক দরের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলবে।”
বুধবার বালুরঘাটে ছবিটি তুলেছেন অমিত মোহান্ত।
জলপাইগুড়িতে পাহাড়পুর, বোয়ালমারি, মন্ডলঘাট, বাহাদুর, রংধামালির মতো গ্রামীন এলাকার হাট বাজার বন্ধ ছিল। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পান্ডাপাড়া কালিবাড়ি এলাকার বাজার সকালে খুললেও বনধ সমর্থকরা পরে দোকানপাট বন্ধ করে দেন। কচুয়াবোয়ালমারি এলাকায় বনধ সমর্থকদের অবরোধে হলদিবাড়ির বিডিও-র গাড়ি আটকে পড়ে। পরে প্রশাসনের অনুরোধে অবরোধ ওঠে। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তোড়লপাড়া, বাহাদুর এলাকার স্কুলও বন্ধ ছিল। সিপিএমের কৃষক সংগঠনের নেতা তথা সিপিএমের সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক জিতেন দাস বলেন, “এদিনের বনধে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলেছে. গ্রামের কৃষিকাজ যেমন বন্ধ ছিল তেমনিই গ্রাম এলাকার হাট বাজার, স্কুল, সরকারি অফিসও বন্ধ ছিল. মানুষরা এই ধর্মঘটে সাড়া দিয়েছে. তবে কিছু কিছু জায়গায় পুলিশের হস্তক্ষেপে যানবাহন চলাচল করানো হয়েছে।” জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও মল্লিকা সেনগুপ্ত মজুমদার বলেন, “বোয়ালমারি এলাকায় অবরোধে হলদিবাড়ির বিডিওর গাড়ি আটকে পড়ে। পরে এলাকায় অবরোধ তুলে দেওয়া হয়. ব্লকের সব গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসেই এদিন কাজকর্ম হয়েছে। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ছিল।” উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, ইটাহারে, রায়গঞ্জে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে মিছিল করেছেন বামপন্থী চাষিরা। ইসলামপুরের দাড়িভিটে জাতীয় সড়কে আলু-পাট ফেলে প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরোধ করেন চাষিরা। করণদিঘিতে অবস্থান-বিক্ষোভ হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, হিলি, তপন ও গঙ্গারামপুর ব্লকের অনেকাংশে গ্রাম-গঞ্জের জনজীবন ছিল তুলনায় স্বাভাবিক। ইতিমধ্যেই জমি থেকে ধান উঠে গিয়েছে। ফলে মাঠ-ঘাটের কাজে তেমন ব্যস্ততা অনেক কম। তবে সংগঠিত কৃষক সমিতির সদস্য-কর্মিদের হাট গুলিতে মিছিল করতে দেখা যায়। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক মানবেশ চৌধুরী দাবি করেন, ধর্মঘট সফল। কোচবিহার সদরের পুন্ডিবাড়ি, দিনহাটার ভেটাগুড়ি, বালাডাঙ্গা, মেখলিগঞ্জ, তুফানগঞ্জ ও মাথাভাঙ্গার বিভিন্ন বুথে ওই মিছিল হয়েছে। কৃষক সভা নেতৃত্বের দাবি, সর্বত্র সাড়া মিলেছে। কৃষক সভার কোচবিহার জেলা সহকারী সম্পাদক অনন্ত রায় বলেছেন, “কৃষি ক্ষেত্রে ডাকা বন্ধ সফল হয়েছে সব জায়গায় মিছিলে লোকও প্রচুর হয়।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি নিরঞ্জন দত্ত দাবি করেন, ধর্মঘটের কোন প্রভাবই এদিন ছিল না। মালদহের চাঁচলের হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়ায় এদিন মাঠে কৃষিজমিতে কৃষকদের উপস্থিতি ছিল বেশ কম। মালতিপুরের চাষি খুরসেদ আলি বা কাশীপাড়ার চাষি শেখ মহিরুদ্দিনরা বলেন, “যে ফসল হচ্ছে তা বেচে লাভের থেকে ক্ষতিই হচ্ছে। তা হলে কৃষিকাজ করে কী লাভ!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.