ব্রাহ্মণ থেকে অনগ্রসর, লক্ষ্য বিজেপির
ত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সংখ্যালঘু তাসের মোকাহিলায় পাল্টা সামাজিক পুনর্বিন্যাসে ভরসা রাখছে বিজেপি। সংখ্যালঘু ভোটের প্রত্যাশা নেই। তাই ব্রাহ্মণ, রাজপুত, বৈশ্য ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ভোট টানতে চায় বিজেপি।
উত্তরপ্রদেশে ভোটযুদ্ধে ঝাঁপানোর আগে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে ‘নেই’-এর তালিকাটি স্পষ্ট। তাঁরা জানেন, বিজেপির কাছে কংগ্রেসে রাহুল গাঁধীর মতো যুবনেতা নেই। রাজ্য বিজেপিতে কোনও গ্রহণযোগ্য নেতা নেই। উমা ভারতীকে দলের মুখ করতে চাইলেও তাঁকে বাধা দেওয়ার নেতারও অভাব নেই। মায়াবতীর মতো তাঁদের কাছে একনিষ্ঠ দলিত ভোটব্যাঙ্ক নেই। তার উপর মায়াবতীর ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ নেতাদের দলে সামিল করিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আগের মতো ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তিও নেই।
এত ‘নেই’-এর মধ্যে বিজেপিকে যে কোনও মূল্যে উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে ভাল ফল করতেই হবে। শুধু রাজ্যে ক্ষমতায় আসাই নয়, উত্তরপ্রদেশে ফলাফল পরের লোকসভা ভোটেও বিজেপির ভাগ্য নির্ধারণ করবে। কারণ, এই রাজ্যে জনভিত্তি বাড়াতে না পারলে দু’বছর পরে লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির তখ্ত দখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। সে কারণে বিজেপির নজর সামাজিক পুনর্বিন্যাসে। তথাকথিত উচ্চবর্ণ থেকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)যেখানে যাদের দাপটে ভোট আনা সম্ভব, সেখানে তাদের দিয়েই বাজিমাত করতে চান বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী। গডকড়ী-ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, এই কৌশলে ভর করে বিজেপি এ বারে উচ্চ বর্ণের ভোট ফের পাওয়ার উপরে সব থেকে বেশি জোর দিচ্ছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম এবং তাঁর দলের বিরুদ্ধে জনরোষ ছিল। কিন্তু বিজেপি সেই মুলায়মের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়। তখন তাদের বদলে মায়াবতীর সামাজিক পুনর্বিন্যাসের সূত্রে ভরসা করেছিল উচ্চবর্ণ সম্প্রদায়। কিন্তু গত পাঁচ বছরে তিনি ব্রাহ্মণদের জন্য ‘কিছু না করায়’ তাঁরা মায়াবতীর উপর ক্ষুব্ধ। বিজেপি সেই ক্ষোভকে কাজে লাগাতে চাইছে। তাই উত্তরপ্রদেশের প্রথম প্রার্থী তালিকাতেই কলরাজ মিশ্র, কেশরীনাথ ত্রিপাঠী-সহ প্রায় পঁচিশ জন ব্রাহ্মণ নেতার নাম ঘোষণা করে দিয়েছে বিজেপি। ব্রাহ্মণ ভোট ফিরিয়ে আনার জন্য ‘চাণক্য স্বাভিমান পরিষদ’ গড়ে জেলায় জেলায় সম্মেলন করা হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশে প্রায় ১২৫টির মতো শহর এলাকায় গড়পড়তায় ১০-২০ হাজারের মতো বৈশ্য সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। যাঁরা বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক। খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির যে প্রবল বিরোধিতা করেছিল বিজেপি, তা মূলত এঁদের ভোটের দিকে তাকিয়েই। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, সেই আন্দোলনের ফলে এই সম্প্রদায়ের ভোট পাবে তারা। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ভোটের আশাও করছে বিজেপি। সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ধার্য সংরক্ষণের মধ্যেই সাড়ে চার শতাংশ সংখ্যালঘু সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে বিজেপি প্রচার করছে, কংগ্রেস অনগ্রসর শ্রেণিকেই ধোঁকা দিয়েছে। উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ারের মতো অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির নেতারাও এই কাজে নেমে পড়েছেন। কাটিয়ার বলেন, “ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের আমরা বিরোধী। প্রচারেও সেই কথা বলা হচ্ছে।” এমনকী দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত মায়াবতীর দল থেকে বিতাড়িত যে নেতাদের বিজেপি দলে নিয়ে আসছে, তাঁদের অধিকাংশই অনগ্রসর শ্রেণির। এই ক্ষেত্রে কল্যাণ সিংহের শূন্যস্থান পূরণ করতে তাঁরই একদা ঘনিষ্ঠ সাক্ষী মহারাজ এবং ছত্রপাল সিংহকে আজ মনোনয়ন দিয়েছে বিজেপি।মুলায়ম সিংহের জনভিত্তিই হল মুসলমান ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি। কংগ্রেসের এই সংখ্যালঘু সংরক্ষণের ঘোষণায় তাঁর দুই ভোটব্যাঙ্কেই আঁচ পড়েছে। ফলে উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে মূলত যাদবদের সঙ্গে টানতে বিজেপি তাদের সাংসদ রমাকান্ত যাদবের উপরেই ভরসা করছে। যাদব অধ্যুষিত এলাকায় সেই সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে প্রার্থী করিয়ে বিজেপি মুলায়মের গড় ভাঙার কৌশল নিয়েছে। এমনকী দলিতদের মধ্যে যাঁদের মায়াবতীর প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে, তাঁদেরও সঙ্গে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.