সাড়া নেই, মাঠেই মারা গেল কৃষি বনধ
বিধানসভা নির্বাচনের পরে প্রথম বার শক্তিপরীক্ষা দিতে মাঠে নেমে এক কালের ‘দুর্গ’ বর্ধমানে হালে বিশেষ পানি পেল না সিপিএম।
বুধবার রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে কৃষি কাজ বনধ রাখার আহ্বান জানিয়েছিল চার বামপন্থী কৃষক সংগঠন। কিন্তু সকাল থেকে জেলার গ্রামীণ এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বহু মাঠে খেতমজুররা যথারীতি কাজ করছেন। গ্রাম থেকে শহরের বাজারে টাটকা শাকসব্জিও এসেছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “বাজারে সমস্ত কিছুর জোগান ঠিকই ছিল। কৃষি কাজ বন্ধ হলে তো আর খেত থেকে সদ্য তোলা টাটকা শাকসব্জির জোগান মিলত না!”
সিপিএমের সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল অবশ্য দাবি করেছেন, বনধে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে। খেতে কাজ হওয়া বা না হওয়া সম্পর্কে জেলা সহকারী কৃষি অধিকর্তা শ্যামল দত্ত কোনও নির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। তাঁর বক্তব্য, “আমি মহাকরণে গিয়েছিলাম। জেলা দফতর থেকে কয়েক বার জরুরি ফোন পেয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু এই বিষয়ে কোনও কথাই বলা হয়নি। তেমন বড় কিছু ঘটলে নিশ্চয়ই খবর পেতাম।”
বুধবার সকালে শক্তিগড়ে ছবিটি তুলেছেন উদিত সিংহ।
বর্ধমান শহর লাগোয়া কয়েকটি জায়গায় গিয়ে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বনধ তো হয়ইনি, এমনকী কৃষি বনধ যে ডাকা হয়েছিল, তা-ও বহু চাষি জানেন না। অনেকে আবার জেনেও রুজির টানে মাঠে নেমেছেন। শক্তিগড়ের মাঠে আলু খেতে কাজ করছিলেন সদানন্দ তা। তিনি বলেন, “কৃষি কাজ বনধের কথা তো শুনিনি! সকালেই মাঠে এসেছি কাজও করেছি। কেউ বারণ করেনি।” গাংপুরের খেতে কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন খেতমজুর শেখ মৈনুদ্দিন। তিনি বলেন, “সিপিএমের স্থানীয় নেতারা বন্ধের প্রচারে নেমেছিলেন। কিন্তু কাজ না করলে আমাদের তো দিন চলবে না। মাঠে কাজ করতে কেউ অবশ্য বাধাও দেয়নি।”
কাটোয়া এবং কালনা মহকুমাতেও বড় কোনও প্রভাব পড়েনি। বেশির ভাগ জায়গাতেই সিপিএম সমর্থক বাদে অন্য খেতমজুরেরা চাষের কাজে নামেন। আলুর জমিতে কীটনাশক ছড়াতে গিয়েছেন কেউ, কেউ বোরো ধানের বীজতলার দেখভাল করতে গিয়েছেন। কালনার কালেখাঁতলা-১ ইন্দিরা মাঠ এবং পারুলিয়ায় পাইকারি বাজারও যথারীতি খোলা ছিল। বহু চাষিই বাজারে ফসল নিয়ে গিয়েছেন। বনধ সমর্থকেরা ব্লক অফিসগুলিতে স্মারকলিপি দেন। মন্তেশ্বরে কয়েক জায়গায় কিছু ক্ষণের জন্য পথ অবরোধও করা হয়েছে।
কালনায় সিপিএমের অবস্থান।
বিকেলে রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, “অনেকে বলছেন, বনধ ব্যর্থ হয়েছে। সরকার থেকে অপসারিত হওয়ার পরে আমাদের ডাকা প্রথম বনধ সফল না হলে অনেকেই আনন্দিত হতে পারেন। তবে আমরা তো সার্বিক বনধ ডাকিনি। বাস, ট্রেন, দোকান, বাজার বন্ধ রাখার আবেদন জানাইনি। গোটা জেলাই সচল ছিল। হয়তো তাই অনেকে ভেবেছেন, বনধে কোনও সাড়াই মেলেনি।” তাঁর দাবি, “কৃষি কাজ বন্ধের মাধ্যমে আমরা কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারকেই বার্তা দিলাম। সর্বনাশা নীতি আর কৃষককে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটতে থাকলে চাষিরা কিন্তু চুপ করে বসে থাকবেন না।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ পাল্টা বলেন, “বামপন্থী সংগঠনগুলি যে বনধ-ই ডেকে থাক, জনগণ তা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। চাষিরা ভাল করে জানেন, বাম সরকারের ভ্রান্ত নীতির জন্যই ওঁদের আজ এত দুরবস্থা। তাই ওঁরা আর বামেদের ফাঁদে পা দেবেন না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.