নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
চালকের সদিচ্ছায় হারানো ব্যাগ ফিরে পেলেন জামার্নির হামবুর্গের এক পর্যটক। তিনি ওই চালকের সততায় দু’হাজার টাকা তুলে দিলেন তাঁর হাতে। মঙ্গলবার সকালে প্রধাননগর থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ওই তরুণের নাম গ্যাব্রিয়েল ভন গ্রাফিয়া ও তাঁর বোনের নাম অলিভিয়া ভন গ্রাফিয়া। তাঁরা জার্মানির হ্যামবুর্গের বাসিন্দা। ছোট গাড়ির ওই চালকের নাম বিনয় সেবা। তাঁর বাড়ি প্রধাননগরের শাস্ত্রীনগরে। গ্যাব্রিয়েল বলেন, “ব্যাগে ভিসা সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল। তা হারিয়ে যাওয়ায় বিপদে পড়ি। চালক ওই ব্যাগ ফিরিয়ে দেওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। পুলিশও আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। এবারে নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারব।” ছোট গাড়ির চালক বিনয় সেবা জানান, তিনি গাড়িতে ব্যাগ দেখতে পেয়ে গ্যাব্রিয়েলের খোঁজে এনজেপি স্টেশনে যান। টিকিট কেটে প্ল্যাটফর্মে ঢুকে তিনি তাঁদের খোঁজ করেন। সেখানে তাঁদের না পেয়ে তিনি গাড়ি নিয়ে বাড়ি চলে যান। এদিন সকালে ওই ব্যাগটি তিনি থানায় জমা দেবেন বলে ঠিক করেন। জংশনে গিয়ে তিনি গ্যাব্রিয়েলকে এক জায়গায় বসে থাকতে দেখেন। তাঁকে নিয়ে প্রধাননগর থানায় যান। বিনয় বলেন, “পুলিশের মাধ্যমে গ্যাব্রিয়েলের হাতে ব্যাগ তুলে দিই। তিনি খুশি হয়ে আমাকে দুই হাজার টাকা দিয়েছেন।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দশেক আগে দার্জিলিংয়ে ঘুরতে যান গ্যাব্রিয়েল ও তাঁর বোন অলিভিয়া। সেখানে একটি হোটেলে তাঁরা ছিলেন। সোমবার দার্জিলিং মেলে এনজেপি স্টেশন থেকে তাঁদের মালদহে যাওয়ার কথা ছিল। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই দুপুরে একটি ছোট যাত্রীবাহী গাড়িতে প্রধাননগরে জংশনে যান। সেখান থেকে একটি সিটি অটো ধরে তাঁরা এনজেপিতে যান। স্টেশনে গিয়ে গ্যাব্রিয়েলের মনে পড়ে একটি ব্যাগ ভুল করে ওই গাড়িতে ফেলে তিনি চলে এসেছেন। ব্যাগে দু’জনের পাসপোর্ট, একটি ক্যামেরা এবং বেশ কিছু কাগজপত্র ছিল। ব্যাগের খোঁজে ফের সিটি অটো ধরে জংশনে যান। সেখানে গাড়িটির খোঁজ করে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন তাঁরা। রাতে প্রধাননগরে একটি হোটেলে রাত কাটিয়ে সকালে গাড়ির খোঁজে দার্জিলিংয়ে যান অলিভিয়া। গ্যাব্রিয়েল জংশন বাস স্ট্যাণ্ডে অপেক্ষা করতে থাকেন। সকাল ৮ টা নাগাদ বিনয় গাড়ি নিয়ে জংশনে পৌঁছে গ্যাব্রিয়েলকে দেখতে পান। তিনি গ্যাব্রিয়েলকে নিয়ে থানায় যান। সেখানে পুলিশের মাধ্যমে গ্যাব্রিয়েলের হাতে ব্যাগ তুলে দেন। খবর পেয়ে অলিভিয়াও দার্জিলিং থেকে ফিরে আসেন শিলিগুড়িতে। গাড়িতে চেপে তাঁরা মালদহের উদ্দেশে রওনা হন। যাওয়ার আগে গ্যাব্রিয়েল বলেন, “খুব ভাল লাগল। সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এবার মালদহ ঘুরে দেখব।” |