কল্যাণীর একটি ক্লাবের মধ্যেই উদ্ধার হল এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান বিশু সোরেন (২৮) নামে ওই যুবককে ভারি কোনও জিনিস দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে কল্যাণীর গয়েশপুর পুরসভার মাঠপাড়ার ওই ক্লাবে বিশুর দেহটি প্রথমে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশু ওই ক্লাবেরই কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। এ ব্যাপারে ক্লাবের দুই সদস্য দুর্গা মুর্মু ও শ্যামল টুডুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এরপরেই স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্গার বাড়ি ও মোটর সাইকেল ভাঙচুর করেন। খুনের পরে চেনা ঢঙেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলের দাবি নিহত ওই যুবক তাদের দলের কর্মী। সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে। সিপিএম অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা দাবি করে, বিশু তাদের ছাত্র ফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে ক্লাব সদস্যদের মধ্যে পারস্পারিক বিরোধের জেরেই ওই খুন। এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক আছে বলে তো মনে হচ্ছে না।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘নিহত বিশু সোরেন আমাদের দলের কর্মী। গত বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের হয়ে প্রচারও করেছিল। এলাকায় ত্রাস ছড়াতে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা এ কাজ করেছে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে একটি সভা করা হবে।” সিপিএমের কল্যাণী জোনাল কমিটির সম্পাদক পার্থ ভট্টাচার্য পাল্টা বলেন, ‘‘কলেজে পড়ার সময় থেকে বিশু আমাদের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে গয়েশপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মাঠপাড়ায় গয়েশপুর আদিবাসী স্পোর্টিং ক্লাবে সাত সকালেও টিভি চলছে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরা জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন, ক্লাবে টিভির মেুখামুখি চেয়ারে কেউ যেন বসে রয়েছে। বার বার ডেকেও সাড়া না মেলায় এর পরেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ক্লাব সম্পাদক রানা মু্র্মু বলেন, ‘‘বিশু এলাকায় ভালো ছেলে বলেই পরিচিত। ভালো ফুটবলও খেলত। হরিণঘাটা কলেজ থেকে সে বিএ পাশ করেছিল। ওর মতো ছেলেকে কেউ খুন করতে পারে এটা আমরা ভাবতেই পারছি না।’’ |