বেশ কিছু দিন ধরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে বনিবনা হচ্ছিল না, পড়শিরা সকলেই তা জানিয়েছেন। কিন্তু তা বলে হাঁসুয়ার কোপে শুধু স্ত্রী নন তিন পুত্র-কন্যাকেও যে নির্বিচারে কুপিয়ে বসবে পিয়ার শেখ তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। মঙ্গলবার কান্দির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে রানিসাগরের ওই ঘটনায় বাড়িতেই মারা যান পিয়ারের স্ত্রী তাজমেহার বিবি (৩৭)। পড়শিরা রক্তাক্ত তিনটি শিশুকে নিয়ে প্রথমে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাদের তিন জনকেই পাঠানো হয় বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ছেলে জিলারুদ্দিন (৯) ও সাইফুল শেখ (২) এবং মেয়ে রিঙ্কি খাতুনের (৫) মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। হাসপাতালের সুপার জানান, তিনটি শিশুর গায়েই কেরোসিন ঢালা হয়েছিল। সম্ভবত তাদের পুড়িয়ে দেওয়ার মতলব করেছিল পিয়ার। জেলা পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা বলেন, “লোকটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ওই ব্যক্তির মানসিক কিছু সমস্যা রয়েছে।”
পেশায় রিকশা চালক পিয়ারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর অশান্তি লেগে থাকত নিত্য। প্রতিবেশীরা জানান, বচসা প্রায়ই হাতাহাতিতে গড়াত। বিবাদের ফলে মাঝে মধ্যেই লাগোয়া মুনিগ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি চলে যেতেন তাজমেহার। ফিরে এলেই সেই অশান্তি।
আদতে ভরতপুর্র বাসিন্দা পিয়ার বছর দেড়েক আগে কান্দির রানিসাগরে এসে সংসার পাতেন। রিকশা চালিয়ে এ দিন দুপুরে বাড়ি ফিরে পিয়ার দেখে স্ত্রী বাপের বানিড় যাওয়ার তোড়জোড় করছেন। এতেই ক্ষেপে যায় সে। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এরপরেই সন্ধ্যেবেলা ঘরের মধ্যে তিন ছেলে-মেয়েকে আটকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপাতে থাকে পিয়ার। পাড়ার লোকেরা জানান, চেঁচামেচি শুনে তারা বেরিয়ে এসে দেখেন, তাজমেহার রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানেই মারা যান তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা এ বার তিন ছেলে-মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। তারপর পিয়ারকে উঠোনে বেঁধে রাখেন। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। |