মোহনবাগান-১ (ওডাফা)
পুণে এফসি-২ (জেজে, লেস্টার) |
তিন পয়েন্ট তো দূরের কথা, এক পয়েন্টও জুটল না। জেতা ম্যাচে হারের বিষাদ নিয়ে কলকাতায় ফিরতে হচ্ছে মোহনবাগানকে।
ওডাফা জ্বললেই বাগানে আলো জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু পুণেতে ওডাফা নামের লাইফলাইন পাশে পেয়েও পালতোলা নৌকার সলিলসমাধি আটকাতে পারলেন না সুব্রত ভট্টাচার্য। ম্যাচের মিনিট কুড়ির মধ্যে বক্সের বাইরে থেকে একটা অনবদ্য শটে তেরো কোটির বাগানে ফুল ফোটান দু’কোটির স্ট্রাইকার। ওডাফার শটের নাগাল পাননি ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে পুণে যাওয়া বাঙালি গোলকিপার অভ্র মণ্ডল।
কিন্তু একক প্রতিভার জোরে একটা দলকে আর কত দিন টানা সম্ভব? ফুটবল এগারো জনের খেলা হলেও, ওডাফাকে বাদ দিলে বাগানের বাকিটা শুধুই অন্ধকার। বিশেষ করে যে দিন আবার টিমে ব্যারেটো নেই। মাঝমাঠে বল ধরে খেলার লোক নেই। গোটা মরসুম নড়বড় করা ডিফেন্সের পাশে দাঁড়ানোর লোক নেই। এ দিন ব্যারেটোর অভাব কিছুটা হলেও ধামাচাপা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন সবুজ তোতার দেশোয়ালি মিডফিল্ডার হাদসন লিমা। ভাগ্যদেবতার হাত মাথায় থাকলে হয়তো স্কোরলাইনেও এই ব্রাজিলিয়ানের নাম লেখা থাকত! বিরতির আগে ও পরে লিমার দু’টো শট-ই দুর্ভাগ্যক্রমে বারে লাগে।
মোহনবাগানের হারের পিছনে মাঝমাঠের দুদর্র্শার থেকেও বড় কারণ শোচনীয় রক্ষণ। কোনও বোঝাপড়া নেই। বিরতির মিনিট দশেক আগে ডান দিক থেকে লেস্টারের ক্রস যখন জেজের মাথায় এসে পড়ছে, তখন হাঁ করে দাঁড়িয়ে বলটাকে দেখছেন আনোয়ার। গোলকিপার সংগ্রাম কিছু বুঝে ওঠার আগেই জেজে ১-১ করে দেন। গোল খাওয়ার পরে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বাগান রক্ষণ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গতি বাড়িয়ে যে ‘অফ দ্য বল’ দৌড়গুলো নিতে শুরু করলেন জেজে-কেইটারা, তাতে বাগানে তো বিস্ফোরণ! কেইটার একটা নিরামিষ ক্রস থেকেই অনায়াসে গোল করে গেলেন লেস্টার। সেই সময়ও নিছক দর্শক আনোয়ার-কিংশুক-নবি।
সাম্প্রতিক কালে এগিয়ে থেকে গোল খাওয়ার বদভ্যাস মোহনবাগানে জাঁকিয়ে বাসা বেঁধেছে। প্রশ্ন হল, নিজের ফুটবলজীবনে যাঁকে একজন যোদ্ধা স্টপার হিসেবে সবাই চিনত, সেই সুব্রতর কোচিংয়ে তাঁর প্রিয় মোহনবাগান ডিফেন্সের এই জঘন্য হাল কেন? শনিবার বড় ম্যাচে লাল-হলুদ মশাল নেভানোর জন্য শুধু ওডাফা-ই কি যথেষ্ট মোহন-টিডির? এ দিকে, ৭ জানুয়ারি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে কলকাতা লিগের ম্যাচে নিরপেক্ষ রেফারিংয়ের দাবি তুলে আইএফএ-কে চিঠি দিল মোহনবাগান। |