ফের একটি চিতাবাঘের মৃত্যু হল। মঙ্গলবার দুপুরে কালচিনি ব্লকের মেচপাড়া চা বাগানে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের মৃতদেহ দেখতে পান শ্রমিকরা। ঘটনাস্থলে যান ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা বিজয় কুমার সালিম। তিনি জানান, মৃত চিতাবাঘটির বয়স ১০ বছরের বেশি। মৃতদেহে পচন না ধরায় কয়েক ঘন্টা আগে চিতাবাঘটি মারা গিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিন বিকেলে রাজাভাতখাওয়া বন্যপ্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রে চিতাবাঘটির মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়। চিতাবাঘটির লিভার ও কিডনিতে পুঁজ পেয়েছেন বন্যপ্রাণী চিকিৎসক। বিজয়বাবু বলেন, “চিতাবাঘটির মৃতদেহের কিছু অংশ সংরক্ষিত করে তা ভিসেরা টেস্টের জন্য ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সিটিটিউট অফ ইন্ডিয়াতে পাঠানো হবে। ওই পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেচপাড়া চা বাগানের চব্বিশ নম্বর সেকশনে এদিন শ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে নালায় প্রায় ছয় ফুট লম্বা চিতা বাঘটির মৃতদেহ দেখতে পান। হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের অধীন ভুতরী বা রায়মাটাং জঙ্গল থেকে চিতাবাঘটি বেড়িয়ে ওই চা বাগানে আশ্রয় নেয় বলে মনে করছেন বনকর্মীরা। পাশেই চা বাগানের একটি ছায়া গাছে চিতাবাঘটি ওঠার চেস্টা করেছিল। ওই ছায়া গাছটিতে প্রায় পনেরো ফুট উপর পযর্ন্ত চিতাবাঘটির নখের আচড় রয়েছে। কোনও কারণে অসুস্থ থাকা বাঘটি গাছ থেকে পড়ে মারা গিয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাঘটির শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। কয়েক মাস আগে মেচপাড়া চা বাগানের পাশে চুয়াপাড়া চা বাগানে একটি চিতাবাঘের পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “একের পর এক বন্যজন্তুর মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু কোনও বন্য জন্তুর মৃতুর কারণ জানাচ্ছে না বন দফতর। ময়না তদন্ত বা ভিসেরা টেস্টের রিপোর্ট দেখে বন্য চিতাবাঘ, হাতি সহ বন্য প্রাণীদের মৃত্যুর আসল কারণ বের করে তা রোধ করার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না। মাঝে মাঝে চা বাগানে চিতাবাঘ ও জঙ্গলে হাতির শাবকের মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে। চিতাবাঘ চা বাগান এলাকাগুলোতে থাকে। চা বাগানে স্প্রে করা রসায়নিক থেকে কোনও সংক্রমণ হয় কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।”
|